জলপাইগুড়ি, 19 অগস্ট: জেলা থেকে শহর, চলছে আরজি কর-কান্ডের প্রতিবাদ ৷ এরই মাঝে বিনোদনের অনুষ্ঠান করতে গিয়ে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের ৷ কলকাতা থেকে স্বনামধন্য শিল্পীদের অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করতে আমন্ত্রণ করা হলেও ফাঁকা রইল দর্শকাসন৷ হতাশ শিল্পীরা ৷ শহরজুড়েই চলছে বিক্ষোভ ৷ সরকারি অনুষ্ঠানস্থলে যাতে প্রতিবাদের আঁচ না পড়ে, সেই কারণে অতি সক্রিয়তা পুলিশের ৷ ব্যারিকেড করে অনুষ্ঠানস্থলকে আগলে রাখা হলেও, কলাকেন্দ্রে এলেন না জলপাইগুড়ির সংস্কৃতিপ্রেমী নাগরিকরাও ৷
রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে জলপাইগুড়ি সরোজেন্দ্র দেব রায়কত কলাকেন্দ্রে 'শ্রদ্ধাঞ্জলি' শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল দুটদিন ধরে ৷ 17 অগস্ট জলপাইগুড়ি হাকিমপাড়ার সরোজেন্দ্র দেব রায়কত কলাকেন্দ্রের মুল গেটের সামনে আরজি কর ঘটনার প্রতিবাদ করার বেশ কয়েকজনকে আটক করে জলপাইগুড়ি কোতয়ালি থানার পুলিশ ৷ এতেই শহরবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ৷ বিজ্ঞানী সুবির সরকার, চিকিৎসক সায়ন পাল, সৌভিক কুন্ডা, জয়দেব মুখোপাধ্যায়, সম্পা সরকার-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয় ৷ পরে ছেড়ে দেওয়া হলেও প্রতিবাদ চলে দিনভর ৷ কোথায় শিল্পীরা ছবি এঁকে প্রতিবাদ করেন ৷ কোথাও আবার ইস্ট-মোহন সমর্থকরা শহরে প্রতিবাদ মিছিল করেন । শহরে নানা দিক থেকে প্রতিবাদ মিছিলের ফলে নাজেহাল আবস্থা হয় পুলিশের ৷
জলপাইগুড়ি জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের পক্ষ থেকে প্রবাদপ্রতিম শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, কিশোর কুমার, মান্না দে, শচিনদেব বর্মন, রাহুলদেব বর্মনের স্মরণে 17 ও 18 অগস্ট শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের আয়োজনের করা হয়েছিল ৷ তাতে জলপাইগুড়ি সরোজেন্দ্র দেব রায়কত কলাকেন্দ্রে শিল্পী রূপঙ্কর বাগচি, জোজো-সহ একাধিক শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় ৷ কিন্তু অনুষ্ঠানে দর্শক ছিল হাতেগোনা ৷ রাজ্যে যখন চারিদিকে আন্দোলন চলছে, তখন এই জলসার আয়োজন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না জলপাইগুড়িবাসী ৷ ফলে তাঁরা এই অনুষ্ঠান বয়কট করেন ৷
সংগীতশিল্পী জোজো বলেন, "দর্শন কেন এলো না, বলতে পারব না ৷ আরজি করের ঘটনার আগেই আমাদের অনুষ্ঠান ঠিক হয়ে গিয়েছিল ৷ ফলে আমরা আমাদের অনুষ্ঠানে এসেছি ৷ আমরাও চাই আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তি হোক ৷" একই সুর গায়ক রূপঙ্কর বাগচির গলাতেও ৷ তিনি বলেন, "আমরা শিল্পী ৷ এটাই আমাদের পেশা ৷ আমাদের অনুষ্ঠান করতেই হবে ৷ পেটের তাগিদে আমাদের অনুষ্ঠান করতে হয় ৷ আমরাও দোষীর শাস্তি চাই ৷"
