কলকাতা, 17 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মতো কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে রদবদল করার কথা সোমবার রাতেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মঙ্গলবার দুপুরে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হল ৷ বিনীত গোয়েলের পরিবর্তে কলকাতার নগরপাল করা হল মনোজ ভার্মাকে ৷ এ দিন নবান্নের তরফে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে ৷
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের পর একাধিক অভিযোগ ওঠে বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে ৷ তাঁর পদত্যাগের দাবিতে সরব হন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে একই দাবি তোলেন তাঁরা ৷ রাতে বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীও জানিয়েছিলেন যে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে রদবদল করা হবে ৷ তিনি জানিয়েছিলেন বিকেল 4টে নাগাদ নতুন নগরপালের নাম ঘোষণা হবে ৷
যদিও তার বেশ কিছুটা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয় যে মনোজ ভার্মাকে কলকাতা পুলিশের নতুন কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হল ৷ 1998 ব্যাচের আইপিএস মনোজ ভার্মা জঙ্গলমহলে মাওবাদী দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন । আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন ৷ কলকাতা পুলিশের ডিসির দায়িত্বও সামলেছেন । এবার তিনিই কলকাতা পুলিশকে নেতৃত্ব দেবেন ৷
আর বিনীত গোয়েলকে লালবাজার থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ভবানীভবনে ৷ এখন থেকে তিনি এডিজি (এসটিএফ)-এর দায়িত্ব সামলাবেন ৷ আগেও এডিজি (এসটিএফ)-এর দায়িত্ব সামলেছেন বিনীত গোয়েল । তাঁকে আবার পুরনো দায়িত্বে ফিরিয়ে দেওয়া হল ।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি মেনে কলকাতা পুলিশের ডিসি (নর্থ) অভিষেক গুপ্তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে ৷ সেই মতো তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে ইএফআর-এর সেকেন্ড ব্যাটালিয়নের সিও করা হয়েছে ৷ কলকাতা পুলিশের ডিসি (নর্থ) করা হয়েছে দীপক সরকারকে ৷ তিনি ছিলেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ৷
এদিকে মনোজ ভার্মা এতদিন ছিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) ৷ সেই পদের দায়িত্ব এবার দেওয়া হল জাভেদ শামিমকে ৷ তিনি দ্বিতীয়বার এই দায়িত্ব পেলেন ৷ জাভেদ শামিমের জায়গায় রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইবি) করা হল জ্ঞানবন্ত সিংকে ৷ জ্ঞানবন্ত ছিলেন ডিরেক্টরেট অফ ইকোনমিক অফেন্সসের ডিরেক্টর ৷ সেই দায়িত্ব দেওয়া হল ত্রিপুরারী অর্থবকে ৷ এতদিন তিনি এডিজি এসটিএফ ছিলেন ৷ তাঁর জায়গাতেই পাঠানো হল বিনীত গোয়েলকে ৷
পুলিশে রদবদল নিয়ে বিজেপির প্রতিক্রিয়া
বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের মতে, বিনীত গোয়েলের কোনও শাস্তি হল না ৷ বরং তাঁকে আরও উচ্চ পদে স্থানান্তরিত করা হল ৷ যেমন সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তেমনই বিনীত গোয়েলকে গ্রেফতার করে জেরা করা উচিত ছিল । ছাত্রছাত্রীরা নগরপালের পদত্যাগ চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু তাঁকে প্রমোশন দিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হল । আর এই দেখে ছাত্রছাত্রীরা আনন্দিত । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি আন্দোলনকারীদের মানতে হল । অন্যদিকে বিজেপি নেতা সজল ঘোষের মতে, বিনীত গোয়েলকে সিবিআই নিশ্চয় গ্রেফতার করবে ৷ তখন সরকারের মুখ পুড়বে ৷