খড়দা, 6 ফেব্রুয়ারি: নিখোঁজ হওয়ার 24 ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। অথচ এখনও খোঁজ মেলেনি খড়দার বিশেষভাবে সক্ষম যুবক গোপাল সাহার। ফলত চরম উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পরিবারের। এই বিষয়ে পুলিশও কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। শুধু দেখছি, দেখব বলেই আশ্বাস দিয়ে চলেছে পরিবারের লোকজনকে। পুলিশের এই গা-ছাড়া মনোভাবে শেষে কোনও বিপদ ডেকে আনবে না তো? এই প্রশ্নই যেন ঘুরপাক খাচ্ছে নিখোঁজ গোপালের পরিবারের সদস্যদের মনে। যদিও, বিশেষভাবে সক্ষম ওই যুবকের হদিশ পেতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না বলে দাবি খড়দা থানার পুলিশের। চলছে তদন্তও।
জানা গিয়েছে, বছর সাতাশের গোপাল খড়দা পৌরসভার 21 নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্ত নগরের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই তিনি বিশেষভাবে সক্ষম।সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ওই যুবক কাউকে কিছু না-বলে হঠাৎই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সেই সময় তাঁর পরনে ছিল ফুল-হাতা জামা এবং প্যান্ট। হাতে ছিল দামি ঘড়িও। তাঁর বেপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি বেশ কিছুক্ষণ বাদে নজরে আসে পরিবারের। এরপরই শুরু হয় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর। আত্মীয় স্বজন থেকে ঘনিষ্ঠ মহল।
সব জায়গায় খোঁজ করেও যুবকের কোনও সন্ধান না-মেলায় শেষে গতকাল বিকেলের দিকে পুলিশের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। দায়ের হয় খড়দা থানায় মিসিং ডায়েরিও। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও বেশ কয়েক ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কিন্তু তারপরও কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি বিশেষভাবে সক্ষম ওই যুবকের। আর তাতেই উদ্বেগ আরও বেড়েছে পরিবারের লোকজনের। নিখোঁজ ওই যুবক কোনও বিপদের মুখে পড়েছেন! নাকি তাঁকে কেউ ভুল বুঝিয়ে অন্যত্র নিয়ে চলে গেল। এই ভেবেই কার্যত রাতের ঘুম উড়েছে পরিবারের।
এবিষয়ে নিখোঁজ গোপালের কাকিমা পম্পা সাহা বলেন, "ও'র একটু মানসিক সমস্যা রয়েছে। কথা বলতে পারে না, এমনটা নয় ৷ বাড়ির ঠিকানা হোক কিংবা নিজের নাম মোটামুটি বলতে পারে। পুলিশ তো নানারকম কথা বলছে। একবার বলছে আপনারা খুঁজে দেখুন ৷ পরমুহূর্তে আবার বলছে আমারও দেখছি।" একই সুর শোনা গিয়েছে অপর এক আত্মীয় বিশ্বজিৎ সাহার গলাতেও। তাঁর কথায়, "কোথাও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ছেলেটার। আমরা চাই পুলিশ সুস্থ অবস্থায় ওকে বাড়ি ফিরিয়ে দিক।"
প্রসঙ্গত, এই খড়দা থানা এলাকাতেই কিছুদিন আগে নিখোঁজ এক নাবালকের হাত-পা বাঁধা নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছিল স্থানীয় একটি জলাশয় থেকে। যা ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বিটি রোড চত্বর। তার রেশ কাটতে না-কাটতে ফের খড়দা থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে গেলেন বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক। দুই ক্ষেত্রেই পুলিশের বিরুদ্ধে উঠেছে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ।
আরও পড়ুন: