ETV Bharat / state

ভোটের মুখে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি, গঙ্গারামপুরে 3 বিজেপি বিধায়কের বিশেষ বৈঠক - North Bengal Separate State

Separate State Issue: লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি উঠছে ৷ এই নিয়ে বিজেপির তিন বিধায়কের বৈঠক ঘিরে জল্পনা ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 26, 2024, 10:53 PM IST

বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য

গঙ্গারামপুর, 26 ফেব্রুয়ারি: উনিশের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে গেরুয়া পতাকা উড়িয়েছিল পদ্ম শিবির ৷ এবার মান রাখার পালা ৷ সম্ভবত সেকারণেই ভোটের আগে আরও একবার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি তৈরি হচ্ছে বিজেপিতে ৷ এই নিয়ে রবিবার গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে বিশেষ বৈঠকও হয়েছে ৷ তাতে অংশ নিয়েছিলেন কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ও গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মন ৷ ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি নেতৃত্বের একাংশও ৷ বৈঠকে সত্যেনবাবু উল্লেখ করেন, এই দাবিতে তৃণমূলের একাধিক বিধায়কেরও সমর্থন রয়েছে ৷

জানা গিয়েছে, রবিবারের বৈঠকে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়েছে ৷ কিন্তু বৈঠকের বেশিরভাগ অংশজুড়েই ছিল পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি সম্পর্কিত নানা বিষয় ৷ বৈঠকে কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, "শুধু বর্তমান সময়েই নয়, স্বাধীনতার পর থেকেই উত্তরের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী যেমন, রাজবংশী, আদিবাসী, রাভা, মেচ, টোটো, গোর্খারা অবহেলিত, বঞ্চিত ৷ রাজ্যের ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন, উত্তরবঙ্গ তাদের কাছে শুধুমাত্র রাজস্ব সংগ্রহের জায়গা ৷ খানিকটা জমিদারির মতো ৷ বঞ্চনার শিকার হতে হতে উত্তরবঙ্গের মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে ৷ তারা এখন আলাদা রাজ্যের দাবি তুলছে ৷ মানুষের এই দাবিতে তাঁরও সমর্থন রয়েছে ৷ সরকার এখন না মানলেও অদূর ভবিষ্যতে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য হবেই ৷"

যদিও ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে গিয়ে যথেষ্ট সাবধানী হলেন সত্যেন্দ্রনাথ ৷ তিনি বলেন, "সন্দেশখালিতে পিছিয়ে পড়া তফশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মানুষের উপর বহিরাগতদের চরম অত্যাচার হয়েছে ৷ বৈঠকে তার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ৷ সন্দেশখালির অত্যাচারিত মানুষের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমরা আগামীতে উত্তরবঙ্গজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন করব ৷ বৈঠকে চার জেলার প্রতিনিধি রয়েছেন ৷ আমরা চাই, যাঁরা এখানকার ভূমিপুত্র, এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, যাঁদের এখান জন্ম, এখানেই কর্ম, সেই মানুষগুলো উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে একত্রিত হতে চায় ৷ আমাদের একত্রিত হতে হবে ৷ আমরা তারই শপথ নিলাম ৷ এখানে তিনজন বিধায়ক রয়েছি ৷ আগামীতে আমরা উত্তরবঙ্গকে সুন্দরভাবে সাজাতে চাই ৷ প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে দেওয়া হোক ৷ আমরা দেশের সঙ্গে থেকেই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করতে চাই ৷ এখানে শুধু বিজেপির লোকজন নেই ৷ বিভিন্ন দলের লোক রয়েছে ৷ কারণ, দার্জিলিং থেকে বৈষ্ণবনগর পর্যন্ত মানুষকে বাঁচাতে হবে ৷"

যদিও এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "বিষয়টি নিয়ে অনেক আগেই দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷ তিন বিধায়কের বৈঠকের খবর আমার জানা নেই ৷ তবে পশ্চিমবঙ্গ যেভাবে তৈরি হয়েছিল, সেভাবেই থাকা উচিত ৷"

রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকসভা ভোটের মুখে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের সেন্টিমেন্ট উত্তরের নির্বাচনে প্রভাব ফেলার সমূহ সম্ভাবনা ৷ কারণ, এর আগে দেখে গিয়েছে, উত্তরের অনেক বিদ্বজ্জনও এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন ৷ বিশেষত এখানে সেভাবে ভারী শিল্প স্থাপন কিংবা চাকরির বাজার তৈরি না হওয়ায় কামতাপুর পিপলস পার্টির মতো ছোট সংগঠনগুলি এখনও এই দাবি জানিয়ে আসছে ৷ কিন্তু এই দাবি ভোট বাজারে উত্তরের আটটি আসনে প্রভাব ফেললেও দক্ষিণবঙ্গে উলটো ফল হতে পারে ৷ ফলে এই ইস্যু নিয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে ৷

আরও পড়ুন :

  1. উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে এবার 'ইন্ডিয়া'র দ্বারে বিমল গুরুংরা
  2. গোর্খাল্যান্ড ছেড়ে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিতে সরব বিমল গুরুং
  3. উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে একত্রিত আঞ্চলিক দলগুলি, আয়োজিত হল যৌথমঞ্চের প্রথম সম্মেলন

বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য

গঙ্গারামপুর, 26 ফেব্রুয়ারি: উনিশের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে গেরুয়া পতাকা উড়িয়েছিল পদ্ম শিবির ৷ এবার মান রাখার পালা ৷ সম্ভবত সেকারণেই ভোটের আগে আরও একবার পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি তৈরি হচ্ছে বিজেপিতে ৷ এই নিয়ে রবিবার গঙ্গারামপুরের বিজেপি বিধায়ক সত্যেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে বিশেষ বৈঠকও হয়েছে ৷ তাতে অংশ নিয়েছিলেন কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা ও গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেব বর্মন ৷ ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের বিজেপি নেতৃত্বের একাংশও ৷ বৈঠকে সত্যেনবাবু উল্লেখ করেন, এই দাবিতে তৃণমূলের একাধিক বিধায়কেরও সমর্থন রয়েছে ৷

জানা গিয়েছে, রবিবারের বৈঠকে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়েছে ৷ কিন্তু বৈঠকের বেশিরভাগ অংশজুড়েই ছিল পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি সম্পর্কিত নানা বিষয় ৷ বৈঠকে কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বলেন, "শুধু বর্তমান সময়েই নয়, স্বাধীনতার পর থেকেই উত্তরের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী যেমন, রাজবংশী, আদিবাসী, রাভা, মেচ, টোটো, গোর্খারা অবহেলিত, বঞ্চিত ৷ রাজ্যের ক্ষমতায় যেই থাকুক না কেন, উত্তরবঙ্গ তাদের কাছে শুধুমাত্র রাজস্ব সংগ্রহের জায়গা ৷ খানিকটা জমিদারির মতো ৷ বঞ্চনার শিকার হতে হতে উত্তরবঙ্গের মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে ৷ তারা এখন আলাদা রাজ্যের দাবি তুলছে ৷ মানুষের এই দাবিতে তাঁরও সমর্থন রয়েছে ৷ সরকার এখন না মানলেও অদূর ভবিষ্যতে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য হবেই ৷"

যদিও ক্যামেরার সামনে মন্তব্য করতে গিয়ে যথেষ্ট সাবধানী হলেন সত্যেন্দ্রনাথ ৷ তিনি বলেন, "সন্দেশখালিতে পিছিয়ে পড়া তফশিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মানুষের উপর বহিরাগতদের চরম অত্যাচার হয়েছে ৷ বৈঠকে তার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে ৷ সন্দেশখালির অত্যাচারিত মানুষের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমরা আগামীতে উত্তরবঙ্গজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন করব ৷ বৈঠকে চার জেলার প্রতিনিধি রয়েছেন ৷ আমরা চাই, যাঁরা এখানকার ভূমিপুত্র, এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, যাঁদের এখান জন্ম, এখানেই কর্ম, সেই মানুষগুলো উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের স্বার্থে একত্রিত হতে চায় ৷ আমাদের একত্রিত হতে হবে ৷ আমরা তারই শপথ নিলাম ৷ এখানে তিনজন বিধায়ক রয়েছি ৷ আগামীতে আমরা উত্তরবঙ্গকে সুন্দরভাবে সাজাতে চাই ৷ প্রয়োজনে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করে দেওয়া হোক ৷ আমরা দেশের সঙ্গে থেকেই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করতে চাই ৷ এখানে শুধু বিজেপির লোকজন নেই ৷ বিভিন্ন দলের লোক রয়েছে ৷ কারণ, দার্জিলিং থেকে বৈষ্ণবনগর পর্যন্ত মানুষকে বাঁচাতে হবে ৷"

যদিও এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "বিষয়টি নিয়ে অনেক আগেই দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷ তিন বিধায়কের বৈঠকের খবর আমার জানা নেই ৷ তবে পশ্চিমবঙ্গ যেভাবে তৈরি হয়েছিল, সেভাবেই থাকা উচিত ৷"

রাজনৈতিক মহল বলছে, লোকসভা ভোটের মুখে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের সেন্টিমেন্ট উত্তরের নির্বাচনে প্রভাব ফেলার সমূহ সম্ভাবনা ৷ কারণ, এর আগে দেখে গিয়েছে, উত্তরের অনেক বিদ্বজ্জনও এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন ৷ বিশেষত এখানে সেভাবে ভারী শিল্প স্থাপন কিংবা চাকরির বাজার তৈরি না হওয়ায় কামতাপুর পিপলস পার্টির মতো ছোট সংগঠনগুলি এখনও এই দাবি জানিয়ে আসছে ৷ কিন্তু এই দাবি ভোট বাজারে উত্তরের আটটি আসনে প্রভাব ফেললেও দক্ষিণবঙ্গে উলটো ফল হতে পারে ৷ ফলে এই ইস্যু নিয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে ৷

আরও পড়ুন :

  1. উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে এবার 'ইন্ডিয়া'র দ্বারে বিমল গুরুংরা
  2. গোর্খাল্যান্ড ছেড়ে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবিতে সরব বিমল গুরুং
  3. উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে একত্রিত আঞ্চলিক দলগুলি, আয়োজিত হল যৌথমঞ্চের প্রথম সম্মেলন
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.