কলকাতা, 13 নভেম্বর: সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ৷ শিক্ষা দফতর এবং দুর্নীতি প্রায় সমার্থক হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির । এবার এই দুর্নীতির যথাযথ তদন্তের দাবি জানাল বাম ছাত্র সংগঠন ৷ এসএফআইয়ের অভিযোগ, শিক্ষা দফতরই এই কেলেঙ্কারির জন্য দায়ী ৷ তবে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গোটা ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন ।
বাম ছাত্র সংগঠনের বক্তব্য, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী-সহ দফতরের প্রথম সারির কর্তারা বর্তমানে সংশোধনাগারে । নানা দুর্নীতির সঙ্গে নবতম সংযোজন এই ট্যাব দুর্নীতি । দেখা যাচ্ছে, ছাত্রছাত্রীদের বদলে ট্যাব কেনার টাকা গিয়েছে অন্যদের অ্যাকাউন্টে । দফতরের শীর্ষস্তরের ব্যক্তিরা এই দুর্নীতিতে যুক্ত না থাকলে এই ঘটনা ঘটা সম্ভব নয় বলে মনে করছে তারা ৷ সেই কারণে এই ঘটনার দায় শিক্ষামন্ত্রককেই নিতে হবে বলে দাবি করেছে এসএফআই ।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছেন । কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, যাঁদের মধ্যে অনেকেই প্রধান শিক্ষক । যদি এই ঘটনায় তাঁরা যুক্ত থাকেনও, তাঁদের একার পক্ষে এই বেনিয়ম ঘটানো সম্ভব নয় বলে মনে করছে সিপিএম ছাত্র সংগঠন এসএফআই ।
তাদের সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, "স্কুলের পরিচালন সমিতির নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে শাসকদলের স্থানীয় মাতব্বরদের স্কুল কমিটিগুলির শীর্ষপদে বসিয়েছে সরকার । তাঁদের ভূমিকাও সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয় । বাংলা শিক্ষা পোর্টালের মতো স্কুলশিক্ষার তথ্য বিষয়ক একটা পোর্টাল কোনওরকম সাইবার নিরাপত্তা ছাড়া চলছিল কীভাবে, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার ।"
তবে, এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্যী বলেন, "এর আগে সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ ওয়েসিস স্কলারশিপের টাকা শাসকদলের ব্লক সভাপতিদের অ্যাকাউন্টে ঢোকার ঘটনা ঘটেছে । এই ক্ষেত্রেও এমন কিছু ঘটেছে কি না তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন । তাহলে কি মানুষের করের টাকা সরকারের মাধ্যমে ঘুরপথে তৃণমূলের দলীয় তহবিলে পৌঁছে দেওয়ার জন্যেই এই সব প্রকল্প চালু করা হয়েছে ? শিক্ষাব্যবস্থাকে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির সিন্ডিকেট থেকে মুক্ত করতে শিক্ষানুরাগী সমস্ত অংশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হন । শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক স্বচ্ছতার দাবিতে লড়াই তীব্রতর করতে হবে রাজপথে ও ক্যাম্পাসে ।"
এ বিষয়ে টিএমসিপি-র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তীকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি । যদিও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি জেলায় অল্প কিছু স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে । পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে । জাতীয় তথ্যকেন্দ্রকেও (এনআইসি) পুরো ব্যাপারটি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে ।"