জলপাইগুড়ি, 11 জুলাই: সিকিমের বন্যার জেরে তিস্তা নদীর গতিপথ বদলের জের। গোটা গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবার উপক্রম। তিস্তার গ্রাসে বিলিন হতে বসেছে লালটং বস্তি। এলাকা পরিদর্শন করার পর অবস্থা বেগতিক দেখে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেবার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের ডাবগ্রাম 1 নং গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষতিগ্রস্থ লালটং বস্তি পরিদর্শন করেন জেলাপরিষদ সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন, রাজগঞ্জ বিধায়ক খগেশ্বর রায়, রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুপালি দে সরকার এবং বিডিও প্রশান্ত বর্মন। লালটং বস্তিতে 36টি এবং চমকডাঙ্গিতে 150টি পরিবার রয়েছে ।
রাজা ছেত্রী ও অমেশ ভুজেল-এর মতো অসহায় বাসিন্দারা জানান, গত বছর সিকিমের বন্যার পর তিস্তার নদীর জল গ্রামে ঢুকে যাচ্ছে। আগে তিস্তা নদী গ্রাম থেকে নিচু ছিল। এখন বন্যার পর পলি বালি এসে পড়ায় তিস্তা উঁচু হয়ে গিয়েছে ৷ গ্রামে জল ঢুকে সব বাড়ি ঘর ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । প্রশাসন অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করলে বেঁচে যাই ৷
জেলাপরিষদ সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন বলেন, "আমরা ইতিমধ্যেই লালটং বস্তি এলাকা পরিদর্শন করেছি। বস্তির পরিস্থিতি খুব খারাপ। বাড়ি ঘর তিস্তার জলে ভেসে যাচ্ছে । মূলত বস্তিবাসীদের পেশা পশুপালন করা। আমরা প্রশাসনের তরফে চেষ্টা চালাচ্ছি বাসিন্দাদের স্থানান্তরিত করতে । স্থানীয়রাও চাইছেন অন্যত্র চলে যেতে। তবে তাঁদের যেহেতু জীবিকা পশুপালন করা, তাই তাঁরা জঙ্গলের আশেপাশে থাকতে চাইছেন। প্রশাসন চেষ্টা করছে সেই ধরনের জায়গা খোঁজার জন্য। ভূমি রাজস্ব দফতর তদন্ত করে দেখছে ৷"
চমকডাঙ্গিতেও একই অবস্থা। তাঁদেরও বাড়ি ঘর তিস্তায় চলে যাচ্ছে। লালটং বস্তি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে খোলাচান ফাপড়ি এলাকায় বস্তিবাসীকে স্থানান্তরিত করা হবে। লালটং বস্তিবাসীকে অন্যত্র সরাতে মূলত সরকারি জমিকে চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। তিস্তার ভাঙনে লালটং বস্তি ও চমকডাঙ্গি এলাকার প্রায় 200 পরিবারকে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে ৷ গত বছর 4 অক্টোবর সিকিমে বিধ্বংসী বন্যার ফলে তিস্তার নদীতে চরা পড়ার কারণে নদীর জল ঢুকে যাচ্ছে লালটং বস্তিতে।