বালুরঘাট, 19 সেপ্টেম্বর: অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল স্কুলেরই সিনিয়র ছাত্রদের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের কেন্দ্রীয় নবোদয় বিদ্যালয়ে ৷ অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ভেতরের হস্টেলে নেশা করে সিনিয়র ছাত্ররা ৷ তারপরেই জুনিয়রদের মারধর করে তারা । স্কুল কর্তৃপক্ষ মারধরের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছে ৷ তবে নেশা করার অভিযোগ মানতে নারাজ স্কুলের প্রিন্সিপাল এমকে ঝাঁ ।
তিনি দাবি করেন, ঘটনায় অভিযুক্ত 4 সিনিয়র ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে । প্রিন্সিপাল বলেন, "আমাদের স্কুলে এরকম ঘটনা ঘটেছে ৷ অষ্টম শ্রেণির দুই ছাত্রকে মারধর করা হয় ৷ ওই ঘটনা সম্পর্কে জানা মাত্রই একাদশ শ্রেণির 4 ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । তাদেরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে । তবে স্কুলে নেশার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে ৷"
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে সিনিয়র হস্টেলে ডেকে নিয়ে গিয়ে অষ্টম শ্রেণির 2 ছাত্রকে আটকে রাখা হয় ৷ তিন ঘণ্টা ধরে তাদের মারধর করে সিনিয়র চার ছাত্র । জুনিয়র ছাত্রদের বাঁচাতে কোনও নিরাপত্তারক্ষী বা হস্টেলের দায়িত্বে থাকা কর্মী এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ । ছাত্রের পরিবারের আরও অভিযোগ, স্কুলের তরফে রাতে আহত ওই দুই ছাত্রকে চিকিৎসকের কাছে পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়নি । বুধবার সারাদিন আহত দুই ছাত্রের পরিবার স্কুলে এসে কর্তৃপক্ষের কাছে মেডিক্যালের কাগজ চাইতে থাকে ৷ স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের মেডিক্যালের কোনও কাগজ দিতে পারেনি ৷ বাড়িতে না জানানোর জন্য পড়ুয়াদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ পরিবারের ।
নির্যাতিত ছাত্রের বাবা জানান, "আমার ছেলে ও আর এক ছাত্রকে একাদশ শ্রেণির ছেলেরা রাত সাড়ে 8টা থেকে সাড়ে 10টা পর্যন্ত মারধর করে । আমার মনে হয় এখানে মাদকদ্রব্য বা নেশা জাতীয় চক্র চলছে ৷ এর ফলেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রদের নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে মারধর করা হচ্ছে । স্কুলের ভূমিকা নিন্দনীয় ৷ রাতের ঘটনা বুধবার সকাল সাড়ে 10টার পরও অভিভাবকদের জানাতে পারেনি । পরে বাচ্চারা অন্য এক অভিভাবকের ফোন নিয়ে আমাদের জানায় । এমনকি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও চিকিৎসককেও বাচ্চাদেরকে দেখাননি । এই ঘটনায় বাচ্চারা আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে ৷ তারা বলছে, আমাদের অন্য যেখানে খুশি নিয়ে ভর্তি করে দাও, আমরা এই বিদ্যালয়ে আর পড়ব না ।"
নির্যাতিত এক ছাত্র জানায়, "সিনিয়র দাদারা আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মারা শুরু করে ৷ এরপর বলে, তুই যদি অভিযোগ করিস তাহলে আরও মারব । মাঝে মাঝেই এ ধরনের মারধর করে ওরা ৷ এর আগে সপ্তম শ্রেণির ছেলেদের বিনা কারণেই মেরেছিল । আমাদের সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটলে আমরা প্রিন্সিপালের কাছে অভিযোগ করি ।"