কলকাতা, 8 অক্টোবর: গণইস্তফা দিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক চিকিৎসকেরা । জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে এই ইস্তফা দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা । প্রায় 50 জন অধ্যাপক চিকিৎসক মঙ্গলবার ইস্তফাপত্রে সই করেছেন ।
সিনিয়র চিকিৎসকদের এ দিনের গণইস্তফার চিঠিতে বলা হয়েছে, "বর্তমানে রাজ্যের হাসপাতালগুলির অবস্থা খুব খারাপ । আমাদের কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে । ওদিকে আমাদের জুনিয়র চিকিৎসকর অনশনে রয়েছে । দিন দিন তাঁদের স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে ৷ তবে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠকে বসতে নারাজ রাজ্য সরকার ৷ তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা ভাবা হচ্ছে না ৷ তাই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে ইস্তফার পথ বেছে নিলাম আমরা ৷"
সিনিয়র চিকিৎসকদের কথায়, "গণইস্তফার মানে আমরা কাল থেকেই কাজ বন্ধ করে দেব, তা নয় । কারণ, এই পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে । তবে আমরা সরকারকে জানিয়েছি আমাদের কথা ।"
ইস্তফা প্রসঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, "ইস্তফা দিয়ে দিলাম মানে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাব, তা নয় । একটা নোটিশ পিরিয়ড থাকে । আর রোগী এলে আমরা চিকিৎসা করব না, এটা হয় না । আমরা এটা করতে পারব না । এটা আমাদের প্রতিবাদের স্বর । রাজ্য সরকারকে বলছি তারা আসুন । আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলুন । দাবিগুলো শুনে অবিলম্বে তা পূরণ করুন ৷"
জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ডাক্তাররা ৷ জুনিয়রদের দাবি পূরণ না হলে আরজি করের পাশাপাশি গণইস্তফার পথে হাঁটতে চলেছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকরাও ৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা ৷
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসক ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জুনিয়র চিকিৎসকরা তাঁদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করছেন এবং সাধারণ মানুষের সেবাও করছেন । কিন্তু রাজ্য সরকার উভয় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে । রাজ্য সরকার যদি জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে সদর্থক ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমরা গণইস্তফা দিতে বাধ্য হব ।"
দশদফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন চালাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ শুক্রবার কর্মবিরতি শেষ করে শনিবার থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ৷ মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যেও ধর্মতলায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা ৷ আগেই সিনিয়র চিকিৎসকেরা জুনিয়রদের পাশে দাঁড়িয়ে অনশনকে সমর্থন করেছিলেন ৷ এবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক চিকিৎসকরা গণইস্তফার পথে হাঁটলেন ৷ অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা এবার কী করেন, সেই দিকে নজর থাকবে ৷
তবে সামনে পুজো, এছাড়াও সামনে এমবিবিএস এবং এমডি স্তরের পরীক্ষা রয়েছে । নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসে ওই পরীক্ষাগুলো হওয়ার কথা রয়েছে ৷ এর ফলে এই গণইস্তফার জেরে সমস্যা তৈরি হতে পারে মেডিক্যাল কলেজে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে । কারণ, অধ্যাপক চিকিৎসকদের গণইস্তফার ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে । জুনিয়র চিকিৎসকদের ক্লাস কে নেবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।