করাচি ও নয়ডা, 17 ফেব্রুয়ারি: চার শিশুসন্তানকে ফিরে পেতে চায় সীমা হায়দারের প্রথম স্বামী ৷ তাই তিনি একজন ভারতীয় আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন ৷ গত বছরের মে মাসে সীমা হায়দার তাঁর প্রেমিক সচিন মীনার টানে পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসেন ৷ সেই সময় তাঁর চার নাবালক সন্তানও সীমার সঙ্গে ভারতে আসে ৷ সীমা এখন সচিনকে বিয়ে করে গ্রেটার নয়ডার রয়েছেন ৷ এবার তাঁর পাকিস্তানের প্রথম স্বামী শিশু সন্তানের ফিরে পেতে আইনের দ্বারস্থ হচ্ছেন ৷ শুক্রবার করাচিতে এই খবর দিয়েছেন এই প্রবীণ সমাজকর্মী তথা আইনজীবী ৷
এদিন পাকিস্তানের প্রবীণ আইনজীবী এবং সমাজকর্মী আনসার বার্নি জানান, সীমার পাকিস্তানের স্বামী গুলাম হায়দার তাঁর 4 সন্তানকে ফিরে পেতে চান ৷ তিনি এ বিষয়ে আইনজীবীর কাছে সাহায্য চেয়েছেন ৷ তাই একজন ভারতীয় আইনজীবী আলি মোমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷ তিনি ভারতীয় আদালতে গুলাম হায়দারের হয়ে আইনি পথে মামলা লড়বেন ৷ আইনজীবী বার্নি হারিয়ে যাওয়া এবং অপহৃত শিশুদের উদ্ধার নিয়ে কাজ করেন ৷ এই কাজে তাঁর নিজের নামে একটি ট্রাস্টিও আছে ৷ এছাড়া পাকিস্তানি জেলে বন্দি থাকা ভারতীয়দের হয়েও তিনি মামলা লড়েন ৷
পাকিস্তানের নাগরিক সীমা হায়দার সিন্ধ প্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন ৷ গত বছর মে মাসে তিনি তাঁর চার শিশু সন্তানকে করাচিতে বাড়িঘর ছেড়ে ভারতের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন ৷ পাকিস্তান থেকে নেপাল হয়ে বেআইনি পথে ভারতে প্রবেশ করেন সীমা ৷ 2023 সালের জুলাই মাসে তাঁর কথা খবরে প্রকাশিত হয় ৷ জানা যায়, মোবাইল গেম খেলতে খেলতে সীমা সচিনের প্রেমে পড়েন ৷ তারপর তিনি ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন ৷ তাঁর স্বামী সৌদি আরবে কর্মরত ছিলেন ৷ সেই সময় সীমা সংযুক্ত আরব আমিরশাহী এবং নেপাল হয়ে বেআইনি পথে ভারতে ঢোকেন ৷
জুলাই মাসে ভারত সরকার জানতে পারে, পাকিস্তানের সীমা হায়দার উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডার তাঁর প্রেমিক সচিন মীনার সঙ্গে থাকছেন ৷ পরে সচিনের সঙ্গে সীমার বিয়ে হয় ৷ এখন সীমা হায়দার অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গিয়েছে ৷ একটি আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সীমা জানিয়েছেন, তিনি হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন ৷ কোনওভাবে পাকিস্তানে ফিরে যেতে চান না ৷ সীমার আরও দাবি, তাঁর চার সন্তানও হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে ৷ ওই সন্তানদের প্রত্যেকের বয়স 7 বছরের নীচে ৷
এদিকে আইনজীবী আনসারির জোর দিয়ে জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক আইনে কোনও নাবালকের ধর্মান্তর করা যায় না ৷ তাই গুলাম এর বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধে নামতে পারে ৷ সীমার ভারতে থিতু হয়েছেন ৷ তবে তাঁর চার সন্তান এখনও পাকিস্তানি নাগরিক এবং তারা নাবালক ৷ তাই বাবা গুলাম হায়দারের তাদের উপর সীমার মতোই সমান অধিকার রয়েছে ৷ প্রবীণ আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, গুলামের তাঁর স্ত্রীর বিষয়ে কোনও আগ্রহ নেই ৷ তিনি শুধু তাঁর সন্তানদের কাছে পেতে চান ৷
এদিকে ভারতে সীমা হায়দার ও সচিন মীনা আইনজীবী এপি সিং একটি সংবাদসংস্থাকে বলেন, "আমরা এরকম কোনও কথা শুনিনি ৷ আমরা যখন সরকারিভাবে এরকম কিছু জানতে পারব, সেই অনুযায়ী এগোব৷" বর্তমানে সীমা এবং মীনার মামলাটির তদন্ত করছে উত্তর প্রদেশের অ্যান্টি-টেররিস্ট স্কোয়াড বা এটিএস ৷ 2023 সালের জুলাই মাসে দফায় দফায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ তার আগে নয়ডা পুলিশ ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে ৷
আরও পড়ুন: