বর্ধমান, 21 জানুয়ারি: আরজি কর কাণ্ডে সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদালত। কিন্তু আদালতের এই রায় নিয়ে বিভিন্ন মহলে একাধিক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ৷ অনেকেই বলছেন যাবজ্জীবন কারাদন্ডের ফলে ফের হাইকোর্টে ফের নতুন করে লড়াই শুরু হবে। আর অনেকের মতে, সঞ্জয় রায়কে ফাঁসি দিলে সেই অপশন আর থাকত না।
শুধু সাধারণ মানুষ নয় একই প্রশ্ন তুলে ফের সরব হয়েছেন চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী। তাঁর মতে, রাজ্যে ও কেন্দ্রে যদি সরকার পরিবর্তন হয়, আর সেই সরকার যদি আন্তরিক হয়ে ফের এই কেসের তদন্ত শুরু করে তাহলে জেলে গিয়ে সঞ্জয়কে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। তাহলে যারা আজ যারা অপরাধ করেও ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের নাম ভবিষ্যতে প্রকাশ্যে আসতে পারে।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সোমবার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদা আদলত ৷ রায় ঘোষণার পরে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "নিম্ন আদালতে সঞ্জয় রায়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। দু'টো অপশন ছিল। হয় ফাঁসি, না-হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ৷ আমি রায়ের আগে থেকেই ফাঁসির বিপক্ষে অর্থাৎ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পক্ষে ছিলাম। দু'টো কারণ ছিল। প্রথম কথা সভ্য দেশে ফাঁসি বিষয়টি উঠে যাচ্ছে ৷ কিছু মানুষ সংগঠিতভাবে একটা মানুষকে ফাঁসির নামে খুন করবে এটা হতে পারে না। কিন্তু তার চেয়েও যেটা বড় কারণ যার জন্য যাবজ্জীবন চাইছিলাম, তা হল সঞ্জয়কে ফাঁসি দিলে তো সে মরেই গেল। তাহলে যে সব অপরাধীরা এখনও চিহ্নিত হয়নি, তাদের সুবিধা হয়ে যাবে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের যোগসাজশে যাদের আড়াল করে রাখা হচ্ছে, তাদের নাম ও পরিচয় আর সামনে আসবে না।"
তিনি আরও বলেন, "কিন্তু চিরকাল তো না রাজ্যে ও কেন্দ্রে একই সরকার থাকবে না। যদি কেন্দ্রে ও রাজ্যে অন্য সরকার আসে এবং তারা যদি আন্তরিক হয়ে ফের তদন্ত করতে চায়, সেক্ষেত্রে জেলে গিয়েও সঞ্জয়কে জেরা করা সম্ভব হবে। তাহলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। আসল অপরাধীদের নাম হয়তো তখন প্রকাশ পাবে।"
গত বছর 9 অগস্ট রাতে আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় রাজ্যজুড়ে। প্রতিবাদে রাজ্য ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার মানুষজন পথে নামে। এই ঘটনায় শনিবার সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে শিয়ালদা আদালত ৷ সোমবার তার সাজা ঘোষণা হয় ৷