কলকাতা, 24 জুন: বিধানসভা উপনির্বাচনের জয়ী দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। সোমবার সেই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ হল ৷ রাজ্যপালকে চিঠি পাঠালেন বরানগরের নবনির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি রাজ্যপালের কাছে দাবি করেছেন, যেহেতু তিনি রাজ্য বিধানসভার সদস্য, তাই তাঁর শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান বিধানসভায় হলেই ভালো। পাশাপাশি যেহেতু অধ্যক্ষ বিধায়কদের কাস্টোডিয়ান তাই তিনি চান এক্ষেত্রে শপথ বাক্য পাঠ করানোর অনুমতি যেন তাঁকেই দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে আগামী 26 তারিখ দুপুর 12টায় রাজভবনে শপথের কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এরপর পালটা চিঠি দিয়ে রাজ্যপালকে বিধানসভায় শপথ নিতে চেয়ে অনুরোধ করলেন নবনির্বাচিত বিধায়ক। এদিন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখাও করেন।
সাংবাদিকদের সায়ন্তিকা জানিয়েছেন, তিনি চাইছেন বিধানসভায় তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হোক ৷ সেক্ষেত্রে শপথ বাক্য পাঠ করাবেন অধ্যক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে বিধায়কদের শপথ নিয়ে বারংবার রাজভবন-বিধানসভা এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। অতীতে বাবুল সুপ্রিয় এবং ধুপগুড়ির বিধায়ক নির্মলচন্দ্র রায়কে নিয়েও এই সংঘাত চরমে উঠেছিল। আরও একবার সায়ন্তিকা এবং রেয়াত হোসেনের শপথ নিয়েও একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
এদিকে সোমবার এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই শপথ নিয়ে তিনি যে অন্ধকারে তা এদিন আরও একবার জানিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ। বিধায়কের শপথের ক্ষেত্রে লোকসভার মতো বিধানসভারও যে গুরুত্ব রয়েছে সেটাই তিনি জানান। এক্ষেত্রে তিনিও চান বিধানসভাতেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হোক ৷ সেই আবেদনই জানালেন রাজ্যপালকে। অধ্যক্ষ বলেন, "যিনি শপথ নেবেন তিনি বিধানসভারই সদস্য হবেন, রাজভবনের সদস্য হবেন না। সেক্ষেত্রে শপথ গ্রহণে বিধানসভার গুরুত্ব বেশি। কোনওভাবেই রাজ্যপাল বিধানসভার গুরুত্ব বুঝতে চাইছেন না।"
এদিন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের প্রশংসাও করেছেন বিমান। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়েছেন, ধনকড়ের সময় এই ধরনের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এদিকে এদিন এই বিষয় নিয়ে ভগবানগোলার নবনির্বাচিত বিধায়ক রিয়াদ হোসেন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনিও চিঠি পেয়েছেন। বিধানসভায় এসে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তারপর দল যে সিদ্ধান্ত নেবে তিনি সেই সিদ্ধান্তই মেনে চলবেন।