কলকাতা, 30 অগস্ট: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবিরেশ ভট্টাচার্যদের জামিনের শুনানিতে ফের আদালতে অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে মুখ্যসচিবের ভূমিকা। কেন এতদিনেও অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ক্ষেত্রে তিনি কন্সেন্ট সংক্রান্ত পদক্ষেপ করেননি, প্রশ্ন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের। মামলাকারীদের তরফে অবশ্য বলার চেষ্টা করা হয়, জামিনের আবেদনকারীদের প্রায় সকলেই সিনিয়র সিটিজেন। যার পালটা বিচারপতিদের কটাক্ষ, "দুর্ভাগ্যক্রমে তাঁরা সিনিয়র সিটিজেন আর প্রতারিতরা সকলেই যুব।"
শুক্রবার আবাদনকারীর আইনজীবীরা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হাইকোর্টে ৷ সম্মতি (কনসেন্ট) আদায়ের ক্ষেত্রে কেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ঝাঁপিয়ে পড়েনি তা নিয়েও সওয়াল করেন তাঁরা। মামলাকারী আইনজীবীদের কাছে বিচারপতি পালটা প্রশ্ন করেন, "যদি না সরকার ধৃত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেমের ক্ষেত্রে সন্মতি দেয়, তাহলে আদালত বা সিবিআই কী করতে পারে ?" একই সঙ্গে, আদালত নিজে থেকে কন্সেন্ট দেওয়ার কথা বলবে না বলেও স্পষ্ট মত জানিয়ে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবিরেশ ভট্টাচার্য ছাড়াও অশোক সাহা, শান্তি প্রসাদ সিনহা, চন্দন মণ্ডলের মতো নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তরা জামিনের আবেদন করেছিলেন।
ধৃতদের আইনজীবীদের সবাই সিবিআই-এর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। তাদের বক্তব্য, সিবিআই 2022 সালে সেপ্টেম্বর মাসে সম্মতি (কনসেন্ট) পাওয়ার জন্য মুখ্যসচিবের কাছে দরবার করেছিল। কিন্তু, তারপরে এতদিন ধরে তারা কী পদক্ষেপ করেছে ? তাদের কাছে আদালত পালটা প্রশ্ন করে, "কেন শুধু সিবিআইয়ের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, কেন রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে বলছেন না ? এর আগে অন্য ডিভিশন বেঞ্চ কন্সেন্ট দেওয়ার ব্যাপারে মুখ্যসচিবকে বারংবার পদক্ষেপের অনুরোধ করেছিল। তাঁর স্পষ্ট অবস্থান জানানোর কথা বলেছিল। কিন্তু, তিনি এখনও পর্যন্ত বিষয়টি খারিজ করেও অবস্থান স্পষ্ট করছেন না ।"
এরই সঙ্গে বিচারপতি বলেন, "সুতরাং এই নিয়ে একটা জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য শুধু সিবিআইকে দোষ দিয়ে বা আদালতকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।" আগামী দিনে সিবিআইকে এই ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত । 19 সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।