সোদপুর, 5 সেপ্টেম্বর: মেয়ের মনের কথা এবং যন্ত্রণা তুলে ধরে ইতিমধ্যেই দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন আরজি করে নির্যাতিতা চিকিৎসক পড়ুয়ার মা। তবে, সেই চিঠির সারমর্ম এতদিন প্রকাশ্যে আনা হয়নি । নির্যাতিতা পরিবারের তরফে জানানো হয়েছিল সঠিক সময়ে সেই চিঠি প্রকাশ্যে আনা হবে । শিক্ষক দিবসে এবার ফের মেয়ের হয়ে তাঁর শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানাতে কলম ধরলেন নির্যাতিতার মা ৷
চিঠির প্রথমেই লেখা, "আমি হতভাগীনি তিলোত্তমার মা বলছি।" এরপরই রয়েছে চিঠির মূল বিষয়বস্তু :-
প্রথমেই চিঠিতে শিক্ষক দিবসে মেয়ের হয়ে সকল শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রণাম জানিয়েছেন নির্যাতিতা চিকিৎসক পড়ুয়ার মা । এরপরই মেয়ের ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের কথা তুলে ধরা হয়েছে । তাতে বলা হয়েছে, আপনারা সেই স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কান্ডারী ছিলেন । আমরা তার অভিভাবক হিসাবে পাশে থেকেছি ৷ নিজেও অনেক কষ্ট করেছিল । কিন্তু আমি মনে করি আপনাদের মত ভালো ভালো শিক্ষকদেরকে পাশে পেয়েছিল বলেই মেয়ে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে পেরেছিল। আমার মেয়ে বলত, মা আমার টাকা পয়সা চাই না । শুধু চাই নামের পাশে অনেকগুলো ডিগ্রি ৷ আর আমি যেন অনেক অনেক রোগীকে ভালো করতে পারি ।
চিঠির দ্বিতীয় প্যারায় ঘটনার দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে । সেই বৃহস্পতিবারও বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাসপাতালে গিয়ে অনেক রোগীকে পরিষেবা দিয়েছিল এবং অন ডিউটি অবস্থায় কিছু দুর্বৃত্তদের হাতে বলি হতে হয় মেয়েকে । চরম নিষ্ঠুরভাবে তার স্বপ্নগুলোকে গলা টিপে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা । যার ফলে অধরা থেকে গেল এমডিতে গোল্ড মেডেল পাওয়ার স্বপ্ন। নারকীয় কাণ্ড ঘটানোর পরও সমস্ত তথ্য প্রমাণ লোপাট করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবং প্রশাসনিক তৎপরতায় ।
চিঠির একেবারে শেষ প্যারায় একমাত্র চিকিৎসক মেয়েকে হারানোর মায়ের আকুল আর্তির কথা তুলে ধরা হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে, সকল মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যভবনের কর্তৃপক্ষ, নার্সিংস্টাফ সবার কাছে বিনীত অনুরোধ আপনাদের কাছে যদি কোনও তথ্য প্রমাণ থাকে তবে সেগুলো সামনে আনুন । কারণ ভালো মানুষের নীরবতা অপরাধীদের সাহস জোগায় বলেই আমি মনে করি । চিকিৎসক সমাজ এবং সাধারণ মানুষ যে আন্দোলন করছে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এবং শিক্ষাক দিবসে সকল শিক্ষকদের প্রণাম জানিয়ে মেয়ের সুবিচারের আশায় দিন গুনছেন তিলোত্তমার মা ।