সোদপুর, 15 ডিসেম্বর: পরিবারের আইনজীবীর মামলা ছাড়া নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নির্যাতিতা পড়ুয়ার বাবা। আরজি কর-কাণ্ডের ন্যায় বিচারের দাবিতে রবিবার সন্ধ্যায় পানিহাটিতে নাগরিক সমাজের এক প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা। তার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আইনজীবীর মামলা ছাড়া নিয়ে মুখ খোলেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা।
বললেন, "আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার সিবিআইয়ের সামগ্রিক কাজকর্ম নিয়ে সবটাই জানতেন! পরবর্তীতে চাপ সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় মাঝপথেই উনি মামলার দায়ভার ছেড়ে চলে গিয়েছেন।"
প্রসঙ্গত, চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের মামলায় সিবিআই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট না-দেওয়ায় জামিন পেয়ে গিয়েছেন আরজি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। যা ঘিরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে জনমানসে। ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে আরজি করে নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার পরিবারের মধ্যেও।
এনিয়ে এদিনও সরব হয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা- তিনি বলেন, "সিবিআই সুযোগ করে দিল বলেই তো সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের জামিন হয়ে গেল! এটা সিবিআইয়ের গাফিলতি। সিবিআই দেশের সবচেয়ে বড় তদন্তকারী সংস্থা। আশা করব, আগামিদিনে ওঁরা ঠিকঠাকভাবে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করবে। এজন্যই তো আন্দোলনকারী ছাত্ররা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বলছে। চাপ থাকলেই সিবিআই কাজ করবে। আন্দোলন আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। বিচার কেউ দেবে না, বিচার ছিনিয়ে আনতে হবে।"
সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে কী কোথাও আপনারা অভিযোগ করবেন? এর জবাবে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করব! পুলিশের কাছে সহযোগিতা না-পেয়ে আদালতে গিয়েছিলাম আমরা। আদালত সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এবার সিবিআইয়ের উপর আস্থা হারিয়ে আমরা কোথায় যাব? সেরকম আর কোনও তদন্তকারী সংস্থা তো আমাদের দেশে নেই। যদি থাকত, তাহলে অবশ্যই সেই তদন্তকারী সংস্থার কাছে যেতাম।"
বৃন্দা গ্রোভারের পরিবর্তে নতুন কোনও আইনজীবী ঠিক হয়েছে কি না, সেবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "মামলা লড়তে গেলে আইনজীবী তো রাখতেই হবে। তবে, এখনও আইনজীবী চূড়ান্ত হয়নি। তিন-চারজনের সঙ্গে কথা চলছে।" এদিকে, সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পেতেই পরিবারের পাশে দাঁড়াতে নির্যাতিতার বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা।
- তাঁর কথায়, "শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। উনি চেষ্টা করছেন। অগ্নিমিত্রা পল, কৌস্তভ বাগচী, সজল ঘোষ-সহ বিজেপির চার-পাঁচজন প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা প্রথম দিন থেকেই চেষ্টা করেছিলেন মেয়ের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করার। কিন্তু, তা সম্ভব হয়নি। সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পাওয়ার পর আলোচনা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে।"