সোদপুর, 14 সেপ্টেম্বর: জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন আরজি-করে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা, মা ৷ বললেন, "ওঁর শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সমস্যার সমাধান হোক সেটাই আমরা চাই।" আরজি কর-কাণ্ডে সুবিচার চেয়ে শনিবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যেই সোদপুরে নাগরিক সমাজের এক প্রতিবাদ মিছিল আয়োজিত হয়। সেই মিছিলে পা-মেলান নিহত চিকিৎসকের বাবা ও মা ৷ তাঁদের সামনেই এদিন স্লোগান ওঠে, "পাড়ার মেয়ের বিচার চাই। মা, বোনেদের আরজি কর, জাস্টিস ফর আরজি কর।" মিছিলের ফাঁকে এদিন সংবাদমাধ্যমের এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রীর জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে যাওয়া নিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা, মা।
তবে, মুখ্যমন্ত্রী বেশকিছু মন্তব্যের বিরোধিতাও করেছেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সল্টলেকের ধর্নামঞ্চে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আরজি করের ঘটনায় যদি কারও দোষ থাকে, সে সাজা পাবেই।" মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে এদিন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে পাল্টা জবাবও দিয়েছেন নির্যাতিতা ছাত্রীর মা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "উনি এখনও বলে যাচ্ছেন, যদি কেউ দোষী থাকে, তবে সে সাজা পাবে। এরপরেও কী কারও আশা থাকে? যদি কেউ দোষী থাকে মানে কী? এখানে সবাই দোষ করেছে। পুলিশ-প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর সকলেই যে দোষী তা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি আমরা। তারপরও উনি বলছেন, যদি কেউ দোষী থাকে তাঁকে সাজা দেওয়া হবে ৷ ওঁর এই মন্তব্যের সঙ্গে আমরা সহমত নই। মুখ্যমন্ত্রী এই কথা ভালো লাগেনি আমাদের।"
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর আরও এক মন্তব্যও এদিন ভালোভাবে নেননি নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবার। মুখ্যমন্ত্রী এদিন ধর্নামঞ্চে দাঁড়িয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে বলেন, "দোষীরা আমার কেউ বন্ধু নন। আবার শত্রুও নন।" এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "সেটা ওঁর ব্যক্তিগত মতামত।" এরপরই নির্যাতিতা ছাত্রীর মা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, "আমি চাইব, উনি ছাত্রদের পাঁচ দফা দাবি মেনে সুষ্ঠু সমাধান করুক! ওঁরা যে কষ্ট পাচ্ছে তার দ্রুত মীমাংসা করা হোক।"
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর 'পদত্যাগ' করলে কী সমস্যার সমাধান হবে? এই প্রশ্নের জবাবে নির্যাতিতার বাবা বলেন, "পদত্যাগ করলে কীভাবে সমাধান হবে! সেটা উনি জানেন। কেন একথা বলছেন সেটা ওঁর ব্যাক্তিগত ব্যাপার। এনিয়ে আর কিছু বলব না।" প্রসঙ্গত, এদিন বৃষ্টির মধ্যেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা। বলতে থাকেন, "আমাদের মনোবল হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা একটা কথায় বারবার বলে আসছি, মেয়ের মৃত্যুর বিচার চাই।"