হাওড়া, 14 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে এখন তোলপাড় সারা রাজ্য ৷ প্রতিবাদে সরব সকলেই ৷ কিন্তু যিনি এই হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন, সেই আরজি কর অর্থাৎ রাধাগোবিন্দ করের পরিবারের লোকজন কী বলছেন এই ঘটনা নিয়ে ? তাঁরাও সমালোচনায় সরব হয়েছেন ৷
ওই পরিবারের সদস্য স্বাগতা ঘোষ বলেন, ‘‘যে লোকটা নিজের মাথার টুপি খুলে হাতে নিয়ে লোকেদের কাছ থেকে ভিক্ষে করে এই হাসপাতাল তৈরি করেছিলেন, সেই প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা ঘটল ৷ প্রতিষ্ঠান যেভাবে কলুষিত হল, তা বলার ভাষা নেই । সেখানে নিরাপত্তা ছিল না, এটা প্রমাণিত । তবু আদালত ও আইনের উপর আস্থা আছে ৷ আশা করব তারা সঠিকভাবে প্রকৃত দোষীকে শাস্তি দেবে । এটা যেন না হয় প্রকৃত দোষীর বদলে অন্য কাউকে ধরে বিচার করা হল ।’’
হাওড়ার চ্যাটার্জিহাট থানার অন্তর্গত বেতর এলাকায় রাধাগোবিন্দ কর, মানে আরজি করের বাড়ি ৷ তাঁর পরিবারের লোকেরা এখন বসবাস করছেন সেখানে । পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে যে আরজি কর ইংল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেও দেশে ফিরে আসেন ৷ বিদেশে থাকলে তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি হয়তো অনেক হতো ৷ কিন্তু তিনি তা না করে, দেশের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন ৷ ইংরেজ আমলে লোকেদের থেকে হাত পেতে ভিক্ষে করে এশিয়ার মধ্যে সর্বপ্রথম বেসরকারি হাসপাতাল তৈরি করেন ।
তাঁর পরিবারের আরেক সদস্য পার্থ করের বক্তব্য, ‘‘সেখানে এই ধরনের নারকীয় ঘটনা, সেই প্রতিষ্ঠানের গরিমা নষ্ট করছে । আমার দিদি-সহ অনেকেই চিকিৎসকের পেশাতেই আছেন, তবে বর্তমানের যে পরিস্থিতি তাতে যদি হাতুড়ে চিকিৎসক তৈরি হয়, তাহলে বড় ক্ষতি । আমি রাজ্যের প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব সঠিক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই ঘটনা রাজ্য, দেশ ছেড়ে আন্তর্জাতিক হয়ে উঠেছে । ইংল্যান্ডের প্রচলিত সংবাদমাধ্যমেও এই খবর প্রকাশিত হচ্ছে । বহু মহিলারা পেশার কারণে অনেক রাতে বাড়ি ফেরেন । আমার বাড়িতেও আছে । তাই তাঁদের নিরাপত্তার বিষয় প্রশাসনকেই দেখতে হবে, এটা তাদের দায়িত্ব ৷
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার একটি সেমিনার হল থেকে এক চিকিৎসক পড়ুয়ার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় ৷ ওই পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে ৷ এই ঘটনা নিয়ে উত্তাল সারা রাজ্য ৷ কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকদের বড় অংশ৷ হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে ৷ পুলিশ আগেই একজনকে গ্রেফতার করেছিল৷ বুধবার তাঁকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷