কলকাতা, 15 জুলাই: আবারও অসাধ্য সাধন রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের। বিরল অস্ত্রপচার করে নজির গড়ল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আরআইও বিভাগ। 2 বছর 9 মাসের এক শিশু ফিরে পেল দৃষ্টি । ক্যানসারের কারণে ওই শিশুর বাঁ-চোখের দৃষ্টি হারিয়েছিল ৷ এবার ডান চোখে ছড়িয়ে পড়ে রোগ ৷ অধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি ইনট্রা অবথেলমিক আর্টারি মেলফালান-এর মাধ্যমে শুরু হয় ডান চোখের চিকৎসা ৷ তাতেই মিলল সাফল্য।
গত বুধবার অস্ত্রোপচার হয় ওই শিশুটির। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে তাকে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, সঠিক সময় চিকিৎসা না হলে পরবর্তী সময়ে সম্পূর্ণ দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলত একরত্তি শিশু। শুধু তাই নয় বেসরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসার খরচ প্রায় 10 লাখ টাকারও বেশি। যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হল কলকাতা মেডিকেল কলেজের আরআইও বিভাগে ৷
দক্ষিণ 24 পরগনার সিন্ধিবেড়িয়ার বাসিন্দা বিপ্রদাস হালদার। তাঁর দুই সন্তান । দেড় বছর আগে ছোট মেয়ের চোখে ক্যান্সার ধরা পড়ে ৷ বাদ দিতে হয় বাঁ চোখ। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়, আবারও তাঁর শরীরে ফিরে আসে প্রাণঘাতী এই রোগ। এবার আক্রান্ত ডান চোখে ৷ বায়োপসিতে ধরা পড়ে ক্যানসার । রোগের অভিঘাত চিন্তায় ফেলেছিল রিজিওনাল ইন্সটিউট অব অবথালমলোজির চিকিৎসকদেরও।
এমনই আবহে এক নতুন থেরাপির সাহায্যে বাঁচানো হল ওই একরত্তির চোখ। নতুন এই অ্যাডভান্স থেরাপির নাম হল "ইনট্রা অবথেলমিক আর্টারি মেলফালান"। যা শুধুমাত্র এই রাজ্যের নয়, পূর্ব ভারতে প্রথম প্রয়োগ করা হল বলে জানা গিয়েছে। আরআইও এর অধিকর্তা ডা. অসীম ঘোষ বলেন, "শিশুটির রেটিনার যেখানে টিউমারটি আছে সেখানেই এই ইনঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে । টিউমারটি ধীরে ধীরে ছোট হয়ে যায় ৷ সংক্রমণটি ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে রেডিয়েশন দেওয়া হয় ৷"
মেদিনীপুরে জটিল অস্ত্রোপচারে সাড়ে ছ’কেজির টিউমার বের হল যুবতীর পেট থেকে
ওই শিশুর চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করা হয়েছিল। সেই বোর্ডে ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অঙ্কোলজি ও রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা। শিশুটি ভর্তি হয়েছিল আরআইও বিভাগের চিকিৎসক সৌম্যদীপ মজুমদারের তত্বাবধানে। চিকিৎসক সৌম্যদীপ মজুমদার জানান, কেমো দিলে ওই শিশুটির বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেত। সেই সব কথা মাথায় রেখে অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে চিকিৎসা হয়েছে ৷