উত্তরপাড়া, 25 ফেব্রুয়ারি: কোন্নগরে নাবালক খুনের ঘটনায় সমকামিতার তত্ত্ব উঠে আসছে পুলিশি তদন্তে ৷ শুধুই কি নিজেদের ভালোবাসার সম্পর্কের জন্য 8 বছরের সন্তানকে খুন করলেন মা ? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ ? সেই প্রশ্নের জবাব পেতে চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরা আলাদাভাবে দুই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন ৷ তবে, মনোবিদ অন্যন্যা ভট্টাচার্যের মতে শুধুই সমকামী সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখার জন্য একজন মা তাঁর সন্তানকে খুন করতে পারেন না ৷ এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি ৷
মনোবিদ অন্যন্যা ভট্টাচার্যের মতে, "অন্য কোনও স্বার্থ চরিতার্থ করতেই বান্ধবীর সঙ্গে মিলে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটিয়েছেন শান্তা শর্মা ৷ তিনি আবেগের বসে খুনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন ৷ এই খুনে শুধুই সমকামিতা নয় ৷ অন্য কোনও স্বার্থ বা আর্থিক লেনদেনের বিষয়ও থাকতে পারে ৷ সমাজে বহু সমকামী মানুষ আছেন ৷ তাঁরা অনেক ভালো কাজ করছেন ৷ যা অনেক ক্ষেত্রে উদাহরণ হয়ে উঠেছে ৷"
তিনি বলেন, "যদি সমকামিতার গন্ধ দিয়ে বিচার করা যায়, আমার মনে হয় না সেটা একটা বড় কারণ ৷ আপেক্ষিক মোহ বা আর্থিক লেনদেনের কারণে দ্রুততার সঙ্গে এটা করা হয়েছে ৷ বান্ধবী ইফফাত পারভিন পরিকল্পনা মাফিক শান্তাকে রাজি করিয়েছেন ৷ যাতে এই ঘটনায় তাঁর উপর কোনও প্রভাব না-পড়ে ৷ মা শান্তার সঙ্গে কথা বলে জানতে হবে ৷ আর যদি সন্তানের জন্য কোন অনুশোচনা না-থাকে, তাহলে মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন উঠছে ৷ তাঁর বান্ধবী যে ঘটনা ঘটিয়েছে, এর পিছনে আরও কিছু কারণ আছে কি না, দেখা জরুরি ৷ এটা দেখাও গুরুত্বপূর্ণ, কে কে এই খুনে লাভবান হবেন ? একজন মা কোন মোহে, সম্পর্কের টানাপোড়েন সব কিছু ভুলে এই নির্মম ঘটনায় যুক্ত হল !"
তবে, শান্তা শর্মা এখনও পুলিশের সামনে সন্তানকে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেননি ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপাড়া থানার লক-আপে তিনি সন্তানের মৃত্যুর শোকের চেয়ে বান্ধবী খোঁজ বেশি করছেন ৷ পুলিশের কাছে থেকে বার বার জিজ্ঞাসা করছে ইফফাত কেমন আছেন ৷ সে খাচ্ছে কি না ৷ এর থেকে তদন্তকারীদের অনুমান দু’জনের সম্পর্ক বেশ গভীর হয়ে উঠেছিল ৷ তবে, সম্পর্কের জন্য নিজের সন্তানকে খুনের বিষয়টি মানতে নারাজ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সমকামী মানুষ ৷ তাঁরা শান্তা এবং ইফফাতের এই ঘটনার নিন্দা করছেন ৷ তাঁদের দাবি, প্রকৃত ভালোভাসা থাকলে এই খুনের কোনও প্রয়োজনীয়তা ছিল না ৷
ইতিমধ্যে, ইফফাত পারভিন পুলিশের কাছে নাবালককে খুনের কথা স্বীকার করেছেন বলে সূত্রের খবর ৷ প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, নাবালক বড় হচ্ছিল ৷ ফলে, দু’জনের সম্পর্কের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল সে ৷ দু’জনের সম্পর্ক প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছিল বাচ্চাটির সামনে ৷ ফলে তাঁদের সম্পর্কে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে শান্তা শর্মা সন্তানের মায়া কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না ৷ অভিযোগ সেই কারণে বান্ধবী ইফফাত পারভিন শান্তাকে বারংবার বুঝিয়ে সন্তানকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য উস্কে ছিল বলে মত পুলিশের ৷
আরও পড়ুন: