রায়গঞ্জ, 23 অগস্ট: বেশি গয়না পরলে নাকি পুলিশকে জরিমানা দিতে হয় ! এমনই দাবি করে এক মহিলাকে কথার ফাঁদে ফেলে প্রায় 15 লক্ষ টাকার গয়না লুঠের অভিযোগ উঠেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্য়ায় এই ঘটনাটি ঘটেছে ৷ যিনি প্রতারিত হয়েছেন তিনি কোনও সাধারণ নারী নন ৷ তিনি রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা ৷ নাম ড. শকুন্তলা গুপ্তা ৷ এভাবে প্রতারিত হয়ে তিনি যতটা বিহ্বল হয়ে পড়েছেন, তার থেকেই বেশি দুঃখিত এটা ভেবে যে একজন শিক্ষিত মহিলা হওয়া সত্ত্বেও তিনি এবাবে বোকা বনে গেলেন ৷
স্থানীয় ব্যবসায়ী মনোজ শর্ফ জানিয়েছেন যে তাঁরা এক মহিলাকে রাস্তায় ধারে দাঁড়িয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন ৷ তার পর হঠাৎই একটি বাইকে দু’জন চলে যান ৷ এর পর ওই মহিলা চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন ৷ তখনই তাঁরা জানতে পারেন যে ওই মহিলার গয়না লুঠ করা হয়েছে ?
স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠেছে যে ঘটনাটি ঠিক কী ?
শকুন্তলা গুপ্তা নামে ওই অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফেরার পর মোহনবাটি বাজারে যাওয়ার উদ্দেশে পায়ে হেঁটে রওনা দেন । ঠিক রাধাকৃষ্ণ মন্দির সংলগ্নস্থানে এক যুবক তাঁকে ডাক দিয়ে বলেন যে ‘আপনাকে একজন ডাকছে’ । সেই কথা শুনে রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে থাকা অন্য এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে দেন ওই যুবক । অধ্যাপিকা সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে জানতে পারেন যে তিনি বেশি গয়না পরে থাকায় তাঁর জরিমানা দিতে হবে ৷ লোকটি নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দেন ৷ একটি পরিচয়পত্রও দেখান ৷ কিন্তু আলো-আঁধারিতে সেটা ভালো করে দেখতে পাননি শকুন্তলা গুপ্তা ৷
অধ্য়াপিকার দাবি, দু’জনই হিন্দিতে কথা বলছিলেন ৷ তাঁরা অন্য একজনকে গলায় থাকা হার খুলতে বলেন ৷ সেই ব্যক্তি তা খুলেও নেন৷ এসব দেখে অধ্যাপিকা কিছুটা স্তম্ভিত হয়ে পড়েন । এবং নিজের গয়না খুলে নিজের ব্যাগে ভরে নেন । কিন্তু কথোপকথন চলাকালীন হঠাৎ সেই ব্যক্তি ব্যাগে রাখা গয়না কোনোরকমে ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেন । সঙ্গে সঙ্গে বাকিরাও চলে যান ৷
এর পরই বিষয়টি স্পষ্ট হয় শকুন্তলা গুপ্তার কাছে ৷ কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ৷ পরে তিনি পুলিশের কাছে এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷ তবে এই ঘটনার রায়গঞ্জে মহিলাদের নিরাপত্তা আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে ৷