স্বরূপনগর, 3 ডিসেম্বর: প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্কুলে অভিভাবকদের বিক্ষোভ । স্টাফরুমে ঝুলিয়ে দিলেন তালা । মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর 24 পরগনার স্বরূপনগর থানার গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন স্বরূপনগরের বিডিও ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবিন্দপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত মোট 249 জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে । তাদের পড়ানোর জন্য সাতজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে । 2010 সাল থেকে সন্দীপ পালিত স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদে রয়েছেন । অভিযোগ, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পড়ুয়াদের ঠিকমতো মিড-ডে মিল দেওয়া হচ্ছে না । যেটুকু দেওয়া হয় তাও অত্যন্ত নিম্নমানের ৷ শনিবার করে বন্ধ থাকে মিড-ডে মিল ৷ স্কুলের উন্নয়ন তহবিল-সহ মিড-ডে মিলের টাকা প্রধান শিক্ষক আত্মসাৎ করেছেন ৷ এমন অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও শিক্ষা দফতরে জমা দিয়েছেন অভিভাবকরা ।
তাঁরা প্রধান শিক্ষকের অপসারণেরও দাবি তুলেছেন । উত্তর 24 পরগনা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকে পয়লা অক্টোবর তদন্তকারী দল স্কুলে আসে । তারপর কেটে গিয়েছে দু'মাস । কিন্তু, তারপরও স্কুলের সার্বিক অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ । এর প্রতিবাদেই মঙ্গলবার অভিভাবকরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান । তারপর তাঁরা স্টাফরুম থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বের করে দেন । ওই ঘরে তালাও ঝুলিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা ।
এই বিষয়ে বিক্ষোভকারী মহম্মদ সুরত আলি সরকার বলেন,"দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ঠিকমতো মিড-ডে মিল পাচ্ছে না । শনিবার করে খাবার দেওয়া পুরোই বন্ধ থাকে ৷ স্কুলের উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচের হিসাবও পাওয়া যাচ্ছে না । তাই, তদন্তের দাবি জানিয়ে আমরা শিক্ষা দফতরে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলাম । কিন্তু কী তদন্ত হয়েছে, না হয়েছে তার কিছুই কিছুই জানতে পারিনি । ফলে, প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চাইছি আমরা । এই দাবিতেই বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে স্কুল চত্বরে ।"
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সন্দীপ পালিত বলেন,"আমার বিরুদ্ধে অভিভাবকরা শিক্ষা দফতরে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন । তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি স্কুলে ঘুরে গিয়েছে । যা বলার বিদ্যালয় পরিদর্শক বলবেন । আমার কিছু বলার নেই ।"
এদিকে, বিক্ষোভের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ওই স্কুলে পৌঁছন স্বরূপনগরের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় । তিনি বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন ।সংবাদমাধ্যমকে বিডিও বলেন,"স্কুলে গোলমালের খবর পেয়ে আমি এসেছি । শনিবার করে কেন মিড-ডে মিল বন্ধ থাকে তা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে । একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে । তারা অভিভাবকদের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে । কমিটির রিপোর্ট হতে পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।"