কোচবিহার/জলাইগুড়ি, 2 ডিসেম্বর: বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও বিভিন্ন মন্দিরে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ দেখাল সনাতনী ঐক্য মঞ্চ। সোমবার দুপুরে এই কর্মসূচি ঘিরে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আটকে দেওয়া হয় বাংলাদেশে যাওয়ার রাস্তাও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ছিল প্রচুর পুলিশ ও বিএসএফ।
পাশাপাশি আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের তত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসের কুশপুতুলও পোড়ায় ৷ আন্দোলনকারীদের পক্ষে প্রাণহরি রায় বলেন, "অন্যায়ভাবে বাংলাদেশের সরকার চিন্ময়কৃষ্ণ দাস প্রভুকে গ্রেফতার করেছে। হিন্দুদের মন্দিরে হামলা চালানো হচ্ছে। এগুলো বন্ধের দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।" আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তিনদিনের মধ্যে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে মুক্তি না দিলে আরও বড় জমায়েতের ডাক দেওয়া হবে সংগঠনের তরফে। এফিন দুপুরে চ্যাংরাবান্ধা হনুমান মন্দির থেকে মিছিল করে বাজার ঘুরে জিরো পয়েন্টে জমায়েত হয়ে তারা এই বিক্ষোভ দেখায় ৷
এদিকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে চ্যাংরাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে যাতায়াত কমে গিয়েছে। আগে গড়ে প্রতিদিন 500 জন যাতায়াত করলেও বর্তমানে তা নেমে দাঁড়িয়েছে 50-এ। রংপুরের বাসিন্দা পুতুল দাস শিলিগুড়িতে চিকিৎসার প্রয়োজনে কিছুদিন আগে ভারতে এসেছিলেন। বাংলাদেশে এই গন্ডগোলের জেরে তারা আতঙ্কিত। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই হবে ৷ তাই তারা বাংলাদেশে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ঢাকার বাসিন্দা এক্সপোর্ট ব্যবসায়ী আকবর হোসেন সোহানি বলেন, "বাংলাদেশের এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়েছে। ভারত সরকার ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিচ্ছে ৷ ডিসেম্বর মাসে সব ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তাই সুসম্পর্ক গড়ে ওঠা দরকার।"
বাংলাদেশে ভারতে জাতীয় পতাকা অবমামনা হচ্ছে ৷ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢোকার মুখে এই দৃশ্য সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।তারই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামল সনাতনীদের সংগঠন হিন্দু জাগরণ মঞ্চ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু সমাজ। জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের মাধ্যমে ভারতের রাস্ট্রপতির কাছে স্মারক লিপি প্রদান করে সনাতনী সংগঠন ৷ সংগঠনের তরফে জানানো হয়, বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বাংলাদেশে কোনও সরকার চলছে না। এই সব ইস্যুতে জলপাইগুড়িতে মিছিল করে প্রতিবাদ জানানো হয়। এদিন খোল করতাল নিয়ে মিছিল করে জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের দফতরে আসেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সদস্যরা।