ETV Bharat / state

আরজি কর: সুপ্রিম কোর্টে 4 মাসে 2 বার আইনজীবী বদল, আইনি জটিলতাতেই কি দেরি ন্যায়বিচারে

আরজি কর মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে দু'ভাগে বিভক্ত সিনিয়র ও জুনিয়র চিকিৎসকেরা ৷ তবে মামলা থেকে হঠাৎই বৃন্দা গ্রোভার সরে দাঁড়ানোয় সকলেই আশাহত ৷

RG Kar Doctor Rape and Murder
আরজি কর মামলায় আইনজীবী বদল নিয়ে গর্জে উঠলেন চিকিৎসকরা (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : 2 hours ago

কলকাতা, 12 ডিসেম্বর: আরজি কর মামলায় নির্যাতিতার মা-বাবার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে চারমাসে দু'বার আইনজীবী বদল হল ৷ আগেই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ এবার মামলাটি ছাড়লেন বিনা পয়সায় লড়তে চাওয়া আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারও । এতবার আইনজীবী বদলের কারণেই কি দেরি হয়ে যাচ্ছে ন্যায়বিচারে ? কী বলছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ?

জুনিয়র চিকিৎসক সৌম্যদীপ রায় বলেন, "বিচার প্রক্রিয়াতে দীর্ঘসূত্রিতা বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায় । এখানেও সেটাই দেখা যাচ্ছে । সিবিআই যে চার্জশিট দেবে সেটা মনিটর করবে কে ? সেইসব দিক থেকে আমরা আশাহত ।"

একই হতাশার সুর অন্য আরেক জুনিয়র চিকিৎসক রুমেলিকা কুমারের গলায় । তিনি বলেন, "বিচারের দায়িত্ব কোর্টের উপর । সেখানে বারবার আইনজীবী বদল, সিবিআইয়ের তদন্তে ঢিলেমি এবং সুপ্রিম কোর্ট এখন আর বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না । আমার সবাই বিচারের আশায় দিন গুনছি, এটা দেশের শীর্ষ জুডিশিয়াল বডি যদি বুঝতে না পারে, তাহলে এখন আমরা কার কাছে যাব ? আমরা ভয়ংকরভাবে হতাশ । এখন পরিষ্কার করে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের আন্দোলনের জন্যই এতদিন তাও এই মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে শোনা হচ্ছিল ।"

যদিও সিনিয়র চিকিৎসকদের গলায় রয়েছে বিভিন্ন সুর । কেউ মনে করেন অসঙ্গতি রয়েছে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের কাজে । আবার কারও মতে, রাস্তায় নেমে আন্দোলন জরুরি ।

আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক তাপস প্রামাণিক বলেন, "এত তাড়াতাড়ি ট্রায়াল শুরু হল কেন ? এই আইনজীবীকে আমার অনেক প্রশ্ন ছিল । কিন্তু বুঝতে পারছি না যেখানে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার লাইভ স্ট্রিমিং হচ্ছে, সেখানে কেন আইনজীবীর তরফে শুনানির পর কেউ কিছু বলছেন না । সব কেন বন্ধ ঘরে হচ্ছে ? আমরা তো কামদুনির ঘটনা দেখেছি । সেখানে তো লুকোনোর কিছু ছিল না । বৃন্দা গ্রোভারকে নিয়ে বাড়ির লোকও হতাশ ছিল । কারণ তাঁদেরও তিনি শুধু বলে গিয়েছেন তদন্ত চলছে । ফলে বলতে বাধা নেই ওঁর কাজে অনেক অসঙ্গতি ছিল ।"

অন্যদিকে, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের সদস্য তথা সিনিয়র চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "আমার মনে হয় অভয়ার পরিবার যে আইনজীবীর প্রতি ভরসা রাখতে পারবে তাকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত । কিন্তু আমরা খুব অবাক হচ্ছি সুপ্রিম কোর্টকে দেখে । কারণ ক্রমে সময় পিছিয়ে যাচ্ছে । 15 দিন থেকে এক মাস করে এখন তিন মাস পিছিয়ে গেল শুনানি । তবে শিয়ালদা কোর্টে শুনানি চলছে । সেখানে বাধা তৈরি করছে রাজ্য সরকার । আমার মতে রাজ্য সরকারের এহেন কাজেই সব আটকে যাচ্ছে ।"

মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, "এই কেসে বহু প্রভাবশালী মানুষেরা জড়িয়ে । তাই মনে হয় কেউই চাইছে না সত্যিটা প্রকাশ হোক । বৃন্দা গ্রোভারের প্রতি কোনও চাপ এসেছে কি না সেটা আমার জানা নেই । আইনজীবী তো মূলত যে তথ্য উঠে আসবে সেটা নিয়ে কথা বলবেন । তবে শুধু তদন্ত প্রক্রিয়াকে জোর দিতে আমাদের সংঘবদ্ধভাবে আন্দোলন জরুরি ।"

কিন্তু বৃ্ন্দা গ্রোভার আরজি কর মামালাটি থেকে কেন সরে দাঁড়ালেন, তা স্পষ্ট নয় অধিকাংশ মানুষের কাছে । এই মামলা চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে । পরবর্তীতে সঞ্জীব খান্নার তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চে হয়েছে আরজি কর মামলার শুনানি । কিন্তু পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য় করা হয়েছে নতুন বছর অর্থাৎ 2025 সালের মার্চ মাসে । এরপরেই আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷

কলকাতা, 12 ডিসেম্বর: আরজি কর মামলায় নির্যাতিতার মা-বাবার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে চারমাসে দু'বার আইনজীবী বদল হল ৷ আগেই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ এবার মামলাটি ছাড়লেন বিনা পয়সায় লড়তে চাওয়া আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারও । এতবার আইনজীবী বদলের কারণেই কি দেরি হয়ে যাচ্ছে ন্যায়বিচারে ? কী বলছেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা ?

জুনিয়র চিকিৎসক সৌম্যদীপ রায় বলেন, "বিচার প্রক্রিয়াতে দীর্ঘসূত্রিতা বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায় । এখানেও সেটাই দেখা যাচ্ছে । সিবিআই যে চার্জশিট দেবে সেটা মনিটর করবে কে ? সেইসব দিক থেকে আমরা আশাহত ।"

একই হতাশার সুর অন্য আরেক জুনিয়র চিকিৎসক রুমেলিকা কুমারের গলায় । তিনি বলেন, "বিচারের দায়িত্ব কোর্টের উপর । সেখানে বারবার আইনজীবী বদল, সিবিআইয়ের তদন্তে ঢিলেমি এবং সুপ্রিম কোর্ট এখন আর বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না । আমার সবাই বিচারের আশায় দিন গুনছি, এটা দেশের শীর্ষ জুডিশিয়াল বডি যদি বুঝতে না পারে, তাহলে এখন আমরা কার কাছে যাব ? আমরা ভয়ংকরভাবে হতাশ । এখন পরিষ্কার করে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের আন্দোলনের জন্যই এতদিন তাও এই মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে শোনা হচ্ছিল ।"

যদিও সিনিয়র চিকিৎসকদের গলায় রয়েছে বিভিন্ন সুর । কেউ মনে করেন অসঙ্গতি রয়েছে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের কাজে । আবার কারও মতে, রাস্তায় নেমে আন্দোলন জরুরি ।

আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক তাপস প্রামাণিক বলেন, "এত তাড়াতাড়ি ট্রায়াল শুরু হল কেন ? এই আইনজীবীকে আমার অনেক প্রশ্ন ছিল । কিন্তু বুঝতে পারছি না যেখানে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার লাইভ স্ট্রিমিং হচ্ছে, সেখানে কেন আইনজীবীর তরফে শুনানির পর কেউ কিছু বলছেন না । সব কেন বন্ধ ঘরে হচ্ছে ? আমরা তো কামদুনির ঘটনা দেখেছি । সেখানে তো লুকোনোর কিছু ছিল না । বৃন্দা গ্রোভারকে নিয়ে বাড়ির লোকও হতাশ ছিল । কারণ তাঁদেরও তিনি শুধু বলে গিয়েছেন তদন্ত চলছে । ফলে বলতে বাধা নেই ওঁর কাজে অনেক অসঙ্গতি ছিল ।"

অন্যদিকে, জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরসের সদস্য তথা সিনিয়র চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "আমার মনে হয় অভয়ার পরিবার যে আইনজীবীর প্রতি ভরসা রাখতে পারবে তাকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত । কিন্তু আমরা খুব অবাক হচ্ছি সুপ্রিম কোর্টকে দেখে । কারণ ক্রমে সময় পিছিয়ে যাচ্ছে । 15 দিন থেকে এক মাস করে এখন তিন মাস পিছিয়ে গেল শুনানি । তবে শিয়ালদা কোর্টে শুনানি চলছে । সেখানে বাধা তৈরি করছে রাজ্য সরকার । আমার মতে রাজ্য সরকারের এহেন কাজেই সব আটকে যাচ্ছে ।"

মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, "এই কেসে বহু প্রভাবশালী মানুষেরা জড়িয়ে । তাই মনে হয় কেউই চাইছে না সত্যিটা প্রকাশ হোক । বৃন্দা গ্রোভারের প্রতি কোনও চাপ এসেছে কি না সেটা আমার জানা নেই । আইনজীবী তো মূলত যে তথ্য উঠে আসবে সেটা নিয়ে কথা বলবেন । তবে শুধু তদন্ত প্রক্রিয়াকে জোর দিতে আমাদের সংঘবদ্ধভাবে আন্দোলন জরুরি ।"

কিন্তু বৃ্ন্দা গ্রোভার আরজি কর মামালাটি থেকে কেন সরে দাঁড়ালেন, তা স্পষ্ট নয় অধিকাংশ মানুষের কাছে । এই মামলা চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে । পরবর্তীতে সঞ্জীব খান্নার তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার ডিভিশন বেঞ্চে হয়েছে আরজি কর মামলার শুনানি । কিন্তু পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য় করা হয়েছে নতুন বছর অর্থাৎ 2025 সালের মার্চ মাসে । এরপরেই আরজি কর মামলার বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.