কলকাতা, 19 জুলাই: "যে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কবি ও কেরানি প্রকাশ্যপথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না, আমি তাকে ঘৃণা করি।" এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুক্রবার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে থেকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের অফিস পর্যন্ত অভিযান করে এসইউসিআই-এর ছাত্র সংগঠন ডিএসও ৷ আর সেই অভিযান ঘিরে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে বামপন্থী ছাত্ররা ৷
ডিএসও-র অভিযানে আধাঘন্টারও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ হয়ে যায় নন্দনের সামনের দুই রাস্তা। পিজি হাসপাতালের রোগী পরিজনরাও ব্যাপক সমস্যায় পড়েন এর জেরে। শেষ পর্যন্ত দুটি প্রিজন ভ্যান ও একটি বাসে প্রায় 120 থেকে 130 জনকে আটক করে লালবাজারে নিয়ে যায় কলকাতা পুলিশ। ফলে, বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনে পৌঁছতেই পারিনি আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বাংলাদেশে নির্বিচার গণহত্যা অব্যাহত, শতাধিক ছাত্রছাত্রী গুলিবিদ্ধ ৷ বুলেট আর শেখ হাসিনার পেটোয়া গুন্ডার দলবলেরা এক অসম যুদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশের অগণিত ছাত্রছাত্রীর উপর। তাদের কথায়, "বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও ৷ প্রকাশ্য রাজপথে গুলি চালিয়ে ছাত্রখুন করে চলেছে সেনা, পুলিশ আর আওয়ামী লিগের জল্লাদবাহিনী। কোটা সংস্কার আন্দোলনে জ্বলছে বাংলাদেশ ৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির দখল নিয়েছে রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী আর শাসক আওয়ামী লিগের গুন্ডাদল ৷ নির্বিচারে কাঁদানে গ্যাস, পেলেট গান, রাবার বুলেট চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রছাত্রীদের তাড়াচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার ৷ অস্থায়ী সেনাপল্টনে পরিণত করেছে। ছাত্রছাত্রী জনতা কিন্তু রাস্তা ছাড়েনি ৷"
এক ডিএসও আন্দোলনকারী বলেন, "ভালো নেই বাংলাদেশ, ভালো নেই আমাদের রাজ্য, ভালো নেই দেশ ও দুনিয়া। বিশ্বজুড়ে স্বৈরতন্ত্রী, অতিদক্ষিণপন্থী আর ফ্যাসিবাদীদের গাঁটছড়া শক্তিশালী হচ্ছে ৷ আমাদের দেশেও একই ছবি দেখছি আমরা ৷ হিন্দুরাষ্ট্রের নামে, মানুষের ধর্ম জাতপাতের উন্মাদনাকে সংগঠিত করে কর্পোরেটের শাসনতন্ত্র আর শাসনযন্ত্র, রাষ্ট্রের হানাদার বাহিনীর আরো আরও শক্তিশালী, আরও নৃশংস হয়ে ওঠার আখ্যান। গণতন্ত্রের টুটি চিপে হত্যার জ্বলন্ত ছবি আমরা দেখতে পাচ্ছি এপার বাংলাতেও।"