মানকুণ্ডু, 4 ফেব্রুয়ারি: স্পোর্টিং ক্লাবের পিচ কিউরেটরের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ৷ আর্থিক সাহায্য়ের দাবিতে দেহ নিয়ে ক্লাবের সামনে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস মেলায় বিক্ষোভ ওঠে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মানকুণ্ডু বাজি পোড়া মাঠে । মৃতের নাম অর্পণ পাল(25) ৷ ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই এই ক্লাবে যুবক কাজ করতেন । তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় মর্মাহত তারা । চন্দননগর পুলিশের মধ্যস্থতায় স্থানীয় মানুষের দাবি মতো আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে ৷
মানকুণ্ডু স্পোর্টিং ক্লাব সিএবি অনুমোদিত । জেলা-সহ একাধিক খেলা হয় মানকুণ্ডু স্পোর্টিং ক্লাবের মাঠে । আর এখানেই দীর্ঘ 10 বছর ধরে পিচ কিউরেটরের কাজ করতেন মানকুণ্ডু মিলন নগরের বাসিন্দা অর্পণ । পরিবারের একমাত্র ছেলে তিনি । সিএবি থেকে কিউরেটর হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অর্পণ । ক্লাবের মাঠে যাবতীয় কাজের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাধে । তাঁর কাছে মাঠই ছিল ধ্যানজ্ঞান । গত তিনদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় মাঠে জল জমে ছিল । শনিবার সকালে পাম্প চালিয়ে সেই জল বের করা ও পিচ প্রস্তুত করার কাজ করছিলেন যুবক ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৈদ্যুতিক তারে কোনও সমস্যা হচ্ছিল । সেই কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অর্পণ । আওয়াজ পেয়ে সেখানে দৌড়ে আসেন মাঠে কাজ করা আর এক যুবক । এরপর অর্পণকে উদ্ধার করে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । পরে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয় ।
এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষ ক্লাব কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ৷ এরপরই আর্থিক সাহায্যের দাবিতে ক্লাবের সামনে দেহ রেখে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ করে স্থানীয় বাসিন্দারা । দীর্ঘ সারে তিন ঘণ্টা আলোচনার পর সমাধান সূত্র বের হয় । চন্দননগর থানার পুলিশের মধ্যস্থতায় অর্পণের মা কাজল পাত্রকে আর্থিক সাহায্য করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ । এরপরেই বিক্ষোভ শুরু হয় ।
প্রতিবেশী মিঠুন নন্দী বলেন, "অর্পণ মাঠের পিচ প্রস্তুত থেকে বাকি সব কাজ করত । ও বিদ্যুতের কাজ জানত না । তাও ওকে দিয়ে বিদ্যুতের কাজ করানো হয় । কাটা তার জলে পরে থাকায় তা থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে যায় । একটা তরতাজা ছেলে চলে গেল । ক্লাব কর্তৃপক্ষ ওকে দিয়ে সব কাজ করাত । অথচ মৃত্যুর পর ওঁর বাবা-মার কী হবে তা ভাবছে না ক্লাব ।"
পরে ক্লাব সম্পাদক সঞ্জয় কর্মকার বলেন, "অর্পণ আমাদের মাঠের পিচ দেখাশোনা করত । আমরা ওদের দাবি মেনে এখন দু'লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি অর্পণের পরিবারকে । আর ওঁর বাবা-মাকে প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে । দু'জনের মেডিক্ল্যেমও করে দেওয়া হবে । আমাদের দক্ষ কর্মীকে হারালাম । আমরাও মর্মাহত ।"
আরও পড়ুন: