কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর: কলকাতা প্রতিবাদের মাটি। কলকাতা মিছিল নগরী। বহু প্রতিবাদ দেখেছে এই শহর। কিন্তু রং, বর্ণ, গন্ধ সরিয়ে একটাই উচ্চচ্ছ্বিত স্বরে আকাশ-বাতাস আন্দোলিত হতে প্রথমবার দেখল কলকাতা। যার নজির নেই। এদিন যেন নজির গড়ল পুরো রাজ্যে। প্রতিস্পর্ধার জলন্ত ছবি নীরব হয়েও চ্যালেঞ্জ ছুড়ল অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
আরজি করে চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য তথা দেশ। চিকিৎসক, শিল্পী থেকে সমাজের সর্বস্তরের মানুষই রাস্তায় নেমে জানাচ্ছেন প্রতিবাদ। রাত দখলেও নামতে দেখা গিয়েছে মহিলাদের। তবে এবার যেন এক অন্য ছবি দেখল কলকাতা। মঙ্গলবার বিকেল থেকে উল্টোডাঙা এলাকা থেকে ইএম বাইপাসের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় অভিনব মানববন্ধন প্রতিবাদ কর্মসূচি।
যেখানে রাস্তার ধার দিয়ে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ, মহিলা, শিক্ষিকা, চিকিৎসক, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত-সহ সর্বস্তরের প্রতিবাদীরা। হাতে জাতীয় পতাকা, মুখে উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান-সহ নানা ধরনের প্রতিবাদের গান ৷ এমনকী জাতীয় সংগীতও। এদিন চিংড়িঘাটা মোড়ে মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়েও প্রতিবাদে অংশ নিতে দেখা যায় বহু মানুষকে। প্রতিবাদীদের দাবি, সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হয়েছেন দুর্নীতির মামলায় ৷ কিন্তু এখনও চিকিৎসক তরুণীকে কর্তব্যরত অবস্থায় যেভাবে খুন হতে হয়েছে তার বিচার মেলেনি।
বিচার যতদিন না-মিলছে ততদিন এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে ৷ পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না-হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে বলেও জানান মানববন্ধনে অংশ নেওয়া প্রতিবাদীরা। জানা গিয়েছে, প্রায় 17 কিলোমিটারের বেশি এই মানববন্ধন-এর আগে কখনও দেখেননি রাজ্যবাসী। তবে এই মানববন্ধনের জেরে কোনওরকম বড় যানজটের সৃষ্টি হয়নি বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু এই প্রতিবাদের অভিঘাত এতটাই গভীর যে শ্লথ হল গাড়ির চাকা। বাসের চালকের সিটে বসে থাকা চালক এবং যাত্রী কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে গন্তব্যে যাওয়া মানুষ চাকা থামিয়ে মুখ বাড়িয়ে উই ওয়ান্ট জাস্টিসের দাবিতে গলা মেলালেন।
14 অগস্ট রাত দখলের ছবি দেখেছিল বাংলা। পথ দখলের ছবিও দেখেছে এই রাজ্য। ব্যস্ত রাস্তায় প্রত্যয়ী শৃঙ্খলও দেখল। এবার বুধবার রাতে 9টা থেকে দশটা আলোহীন শহর দেখার ডাক আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদীদের, যা সমর্থন করার জন্য তৈরি হচ্ছে সমাজ।
আরজি কর কাণ্ডে খাবারের বিলে 'জাস্টিস', প্রতিবাদে সামিল ফুড ডেলিভারি ব্যবসায়ী