ETV Bharat / state

ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার জোড়াফলা মালদায়, মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে অভিযানে প্রশাসন - Preventing Dengue and Malaria

Preventing Dengue and Malaria: ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করতে অভিযানে নামল মালদা জেলা প্রশাসন ৷ বর্ষা নামার আগেই গত 6 মাসে মালদা জেলায় ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো পেরিয়ে গিয়েছে ৷ ফলে আগাম সতর্কতা হিসেবে জেলা স্বাস্থ্য দফতর প্রচার ও প্রতিরোধ অভিযানে নেমেছে ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 13, 2024, 4:43 PM IST

ETV BHARAT
বর্ষার আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধে অভিযান মালদায় ৷ (নিজস্ব চিত্র)

মালদা, 13 জুন: ডেঙ্গির দোসর ম্যালেরিয়া ৷ দুইয়ের দাপটে কাঁপছে মালদা জেলার নাগরিকরা ৷ ফলে মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর ৷ ইতিমধ্যে, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রুখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে ৷ প্রশাসনের বক্তব্য, মশার মোকাবিলায় সবার আগে মানুষের সচেতন হওয়া প্রয়োজন ৷

বর্ষার আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধে অভিযান মালদায় ৷ (ইটিভি ভারত)

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা 142 ৷ সেখানে 183 জনের রক্তের নমুনায় ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গিয়েছে ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চলছে স্বাস্থ্য দফতরের ৷ বাড়ানো হয়েছে টেস্টের সংখ্যা ৷ দেখা যাচ্ছে, মূলত ইংরেজবাজার ও কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ৷ ম্যালেরিয়ায় মূলত আক্রান্ত হচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ এই তথ্য মিলতেই সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷ কালিয়াচকের বিভিন্ন জায়গায় মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানো হয়েছে ৷ মালদা শহরে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ মানুষকে সচেতন করছেন তাঁরা ৷

এদিকে প্রদীপের নীচেই যেন অন্ধকার ৷ বর্ষা শুরুর আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু হয়ে গেলেও, একশ্রেণির মানুষের যেন তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই ৷ মালদা শহরের বেশ কিছু জায়গায় আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়েছে ৷ পৌরসভার তরফে অবশ্য দ্রুত সেসব সাফাই করা হচ্ছে ৷ মানুষের এই অসাবধানতাই চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের ৷

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলছেন, "গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একটু বেশি ৷ তাই এবার রক্ত পরীক্ষার হারও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ডেঙ্গি নিয়ে জেলাশাসক গত একমাসে তিন থেকে চারবার পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন ৷ মূলত চারটি ব্লকে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের মাত্রা বেশি ৷ এখনও পর্যন্ত মোট 142 জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে ৷ তাঁদের মধ্যে মাত্র একজনকে মালদা মেডিক্যালে ভর্তি করতে হয়েছে ৷ বাকিরা বাড়িতেই চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৷ ডেঙ্গির সংক্রমণ রুখতে জেলাশাসক বিডিওদের জন্য আগামী 3-4 দিনের একটি রোস্টার করে দিয়েছেন ৷ মূলত সাফাই অভিযান নিয়ে সেই রোস্টার ৷ চিকিৎসা নিয়েও আমাদের একপ্রস্থ ট্রেনিং হয়ে গিয়েছে ৷ আগামী মাসেও একপ্রস্থ ট্রেনিং হবে ৷ গত 3-4 বছরে মালদায় ডেঙ্গিতে কোনও মৃত্যু হয়নি ৷ আশা করি, এবারও হবে না ৷"

জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে জেলা স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, "পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন ৷ মূলত দক্ষিণ ভারত থেকে আসা শ্রমিকদের মধ্যেই ম্যালেরিয়া দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ৷ আমরা ইতিমধ্যে শ্রম দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ৷ জ্বর নিয়ে ফেরা পরিযায়ীদের স্টেশনেই রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ তাঁদের সেখান থেকেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে ৷ সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি পাঠানো হচ্ছে ৷"

তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত জেলায় 183 জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে মাত্র দু-তিন জন জেলায় আক্রান্ত ৷ তাঁরা একই এলাকার বাসিন্দা ৷ বৃহস্পতিবার এলাকার 100টি বাড়িতে সার্ভে করা হয়েছে ৷ রক্ত পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পও বসানো হয়েছে ৷ এই মুহূর্তে 10-12 জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৷"

ইংরেজবাজার পৌরসভার এক স্বাস্থ্যকর্মী রিমি কর্মকার বলছেন, "বর্ষা আসছে ৷ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়াও বাড়তে শুরু করবে ৷ আমরা যদি আগে থেকে মানুষকে সতর্ক না করি, তবে পরিস্থিতি ভয়ানক হতে পারে ৷ তাই আমাদের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা রোজ সকালে বেরিয়ে প্রতিটি বাড়ি ভিজিট করছি ৷ ছাদের টব, ফাঁকা জায়গায় থাকা টায়ার কিংবা অন্য কোথাও জল জমে রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছি ৷ সেসব দেখতে পেলে আমরা উলটে দিচ্ছি ৷ বাড়ির লোকজনকেও সতর্ক করছি ৷ প্রতিটি বাড়ির তথ্য আমরা নোট করছি ৷ বাড়ির কেউ জ্বরে আক্রান্ত কিনা, তা নিয়েও খোঁজ চালাচ্ছি ৷ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রুখতে মানুষকেই আগে সচেতন হতে হবে ৷ তা না হলে রোগ আটকানো যাবে না ৷"

মালদা, 13 জুন: ডেঙ্গির দোসর ম্যালেরিয়া ৷ দুইয়ের দাপটে কাঁপছে মালদা জেলার নাগরিকরা ৷ ফলে মশাবাহিত রোগের বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর ৷ ইতিমধ্যে, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া রুখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে ৷ প্রশাসনের বক্তব্য, মশার মোকাবিলায় সবার আগে মানুষের সচেতন হওয়া প্রয়োজন ৷

বর্ষার আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধে অভিযান মালদায় ৷ (ইটিভি ভারত)

জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা 142 ৷ সেখানে 183 জনের রক্তের নমুনায় ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গিয়েছে ৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চলছে স্বাস্থ্য দফতরের ৷ বাড়ানো হয়েছে টেস্টের সংখ্যা ৷ দেখা যাচ্ছে, মূলত ইংরেজবাজার ও কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ৷ ম্যালেরিয়ায় মূলত আক্রান্ত হচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ এই তথ্য মিলতেই সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷ কালিয়াচকের বিভিন্ন জায়গায় মেডিক্যাল ক্যাম্প বসানো হয়েছে ৷ মালদা শহরে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ মানুষকে সচেতন করছেন তাঁরা ৷

এদিকে প্রদীপের নীচেই যেন অন্ধকার ৷ বর্ষা শুরুর আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার সাঁড়াশি আক্রমণ শুরু হয়ে গেলেও, একশ্রেণির মানুষের যেন তাতে কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই ৷ মালদা শহরের বেশ কিছু জায়গায় আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়েছে ৷ পৌরসভার তরফে অবশ্য দ্রুত সেসব সাফাই করা হচ্ছে ৷ মানুষের এই অসাবধানতাই চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের ৷

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলছেন, "গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একটু বেশি ৷ তাই এবার রক্ত পরীক্ষার হারও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ডেঙ্গি নিয়ে জেলাশাসক গত একমাসে তিন থেকে চারবার পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন ৷ মূলত চারটি ব্লকে ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাবের মাত্রা বেশি ৷ এখনও পর্যন্ত মোট 142 জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে ৷ তাঁদের মধ্যে মাত্র একজনকে মালদা মেডিক্যালে ভর্তি করতে হয়েছে ৷ বাকিরা বাড়িতেই চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৷ ডেঙ্গির সংক্রমণ রুখতে জেলাশাসক বিডিওদের জন্য আগামী 3-4 দিনের একটি রোস্টার করে দিয়েছেন ৷ মূলত সাফাই অভিযান নিয়ে সেই রোস্টার ৷ চিকিৎসা নিয়েও আমাদের একপ্রস্থ ট্রেনিং হয়ে গিয়েছে ৷ আগামী মাসেও একপ্রস্থ ট্রেনিং হবে ৷ গত 3-4 বছরে মালদায় ডেঙ্গিতে কোনও মৃত্যু হয়নি ৷ আশা করি, এবারও হবে না ৷"

জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব নিয়ে জেলা স্বাস্থ্যকর্তার বক্তব্য, "পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন ৷ মূলত দক্ষিণ ভারত থেকে আসা শ্রমিকদের মধ্যেই ম্যালেরিয়া দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ৷ আমরা ইতিমধ্যে শ্রম দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি ৷ জ্বর নিয়ে ফেরা পরিযায়ীদের স্টেশনেই রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ তাঁদের সেখান থেকেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে ৷ সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি পাঠানো হচ্ছে ৷"

তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত জেলায় 183 জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে মাত্র দু-তিন জন জেলায় আক্রান্ত ৷ তাঁরা একই এলাকার বাসিন্দা ৷ বৃহস্পতিবার এলাকার 100টি বাড়িতে সার্ভে করা হয়েছে ৷ রক্ত পরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্পও বসানো হয়েছে ৷ এই মুহূর্তে 10-12 জন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৷"

ইংরেজবাজার পৌরসভার এক স্বাস্থ্যকর্মী রিমি কর্মকার বলছেন, "বর্ষা আসছে ৷ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়াও বাড়তে শুরু করবে ৷ আমরা যদি আগে থেকে মানুষকে সতর্ক না করি, তবে পরিস্থিতি ভয়ানক হতে পারে ৷ তাই আমাদের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা রোজ সকালে বেরিয়ে প্রতিটি বাড়ি ভিজিট করছি ৷ ছাদের টব, ফাঁকা জায়গায় থাকা টায়ার কিংবা অন্য কোথাও জল জমে রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছি ৷ সেসব দেখতে পেলে আমরা উলটে দিচ্ছি ৷ বাড়ির লোকজনকেও সতর্ক করছি ৷ প্রতিটি বাড়ির তথ্য আমরা নোট করছি ৷ বাড়ির কেউ জ্বরে আক্রান্ত কিনা, তা নিয়েও খোঁজ চালাচ্ছি ৷ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রুখতে মানুষকেই আগে সচেতন হতে হবে ৷ তা না হলে রোগ আটকানো যাবে না ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.