হরিপাল, 24 নভেম্বর: আলুর দামে নিয়ন্ত্রণ আনতে সচেষ্ট হয়েছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী আলু দাম নিয়ে ক্ষোভের পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গত কয়েকদিন ধরেই সরকারি তরফে ব্যবসায়ী সমিতিদের সঙ্গে বৈঠক চলছে। দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের উপর সরকারি চাপ বাড়ানো হয়। বর্তমানে পাইকারি আলুর দাম যাচ্ছে মোটামুটি 27 টাকা কেজি। কিন্তু, সেই আলু খুচরো বাজারে 32 টাকা কিলো দরে বিক্রি হচ্ছে । আলুর দামে রাশ টানতে কলকাতার পর শনিবার হরিপালে কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচরাম মান্না, প্রশাসনিক আধিকারিক ও ব্যবসায়ীরা বৈঠক করেন।
এই বৈঠকে আলুর দাম কেজি প্রতি 1 টাকা কমায় ব্যবসায়ীরা ৷ কলকাতার বাজারে আলু 30 টাকা কেজি দরে মিলবে বলে দাবি করেন মন্ত্রী। যদিও, সোমবার থেকে এই দাম কার্যকর হচ্ছে । এরপর টাস্কফোর্স নজরদারি চালাবে শহরের বিভিন্ন বাজারে। হরিপাল পঞ্চায়েত সমিতির মিটিং হলে রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না সুফল বাংলার প্রজেক্ট ডিরেক্টর গৌতম মুখার্জী, পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখার্জী ও রাজ্য হিমঘর এসোসিয়েশনের সভাপতি পতিতপাবন দে সহ আলু ব্যবসায়ী ও হিমঘর মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মন্ত্রী। গতকালই আলুর দাম নিয়ন্ত্রনে নবান্নে টাস্কফোর্সের বৈঠক হয়।
ভিন রাজ্যে আলু রফতানি এবং আলুর দাম বৃদ্ধি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এর পরই আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে বৈঠক ডাকা হয়। হুগলি জেলার আলু মূলত কলকাতায় যায়। সেই আলুর দাম চড়তে থাকায় তা কমাতে উদ্যোগ নেয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রী দায়িত্ব দেন বেচারাম মান্নাকে। ভিন রাজ্যে আলু যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা না দিলেও আলুর দাম কমাতে ব্যবসায়ীদের দুদিন সময় দেওয়া হয়। গতকাল হরিপালে সেই নিয়ে বৈঠক হয়।
প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, "সাতাশ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল জ্যোতি আলু।আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, 26 টাকায় ওই আলু দেওয়ার। সোমবার থেকে বাজারে ওই দামে আলু পৌঁছে যাবে। ভিন রাজ্যে আলু যেমন যাচ্ছে যাবে।সে রকম নিষেধাজ্ঞা নেই। এখনও হিমঘরগুলিতে প্রায় 10 লক্ষ মেট্রিকটন আলু মজুত আছে। নভেম্বর মাসের 30 তারিখ পর্যন্ত হিমঘর খোলা রাখার কথা বলেছে সরকার। আমার চাইছি 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত তা খোলা থাকুক ।"
রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, "আলুর দাম কমাতে টাস্কফোর্সের মিটিং হয়েছে । সেখানে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেছিলেন, আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করতে। কলকাতার আলু হুগলি থেকে সরবরাহ হয়। সেই মতো শনিবার সমস্ত আলু ব্যবসায়ীদের নিয়ে মিটিং হয়েছে।ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ব্যবসায়ীরা 26 টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করবেন। সেই আলু কলকাতায় কেজিতে 30 টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
আগামী সোম-মঙ্গলবার থেকে এর প্রভাব পড়বে। দাম কমানোর জন্য সরকার চাপ দিয়েছে। পাইকারি দর 26 টাকা হলে খুচরো বাজরে দাম বেশি নিচ্ছে কিনা, তা নজরদারী করা যাবে। সুফল বাংলায় কলকাতায় আমরা 28 টাকায় আলু বিক্রি করব। ব্যবসায়ীরা গুরুত্ব না দিলে সরকার ব্যবস্থা নেবে ।"