কলকাতা, 26 জুন: পুলকার ও স্কুলবাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নড়েচড়ে বসল রাজ্য পরিবহণ দফতর ৷ এই মর্মে প্রকাশ করা হয়েছে একগুচ্ছ গাইডলাইনও ৷ স্কুল বাস এবং পুলকারগুলিকেও মেনে চলতে হবে এই নিয়ম । তবে এই নির্দেশিকা নিয়ে পুলকার মালিক এবং চালকদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশের মতে আজ না-হয় কাল এই গাইডলাইনের নিয়মে পরিবর্তন হলে প্রভাব পড়বে ব্যবসায়।
পুলকার ও স্কুলবাসের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন সময়। অনেক সময় অভিভাবকরা অভিযোগ তুলেছেন, একটি গাড়িতে গাদাগাদি করে বাড়তি বাচ্চা বহন করা হচ্ছে পুলকারে। আবার কখনও পুরোনো খারাপ গাড়ি দিয়ে চলছে পুলকার ব্যবসা। অভিযোগ এও যে, ব্যক্তিগত নম্বর প্লেটেও চলছে পুলকার ব্যবসা।
তাই কচিকাঁচাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সম্প্রতি (21 জুন) একগুচ্ছ গাইডলাইন রাজ্য পরিবহন বিভাগ। যদিও এই তালিকার বেশ কিছু নিয়ম বাধ্যতামূলক হলেও, কিছু নিয়ম পরামর্শ আকারে দেওয়া হয়েছে । এই প্রসঙ্গেই পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, গাইডলাইনে জারি করা নির্দেশিকাগুলি বর্তমানে স্কুলবাসের ক্ষেত্রে বলবৎ হলেও পরে পুলকারের ক্ষেত্রে কার্যকর করা হতে পারে। পরিবহণ দফতর, পুলিশ বিভাগ, শিক্ষা দফতর এবং অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠকের পরই এই গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে।
গাইডলাইন অনুযায়ী, স্কুল থেকে আনা-নেওয়ার জন্য বাণিজ্যিক গাড়িগুলিতে হলুদ নম্বর প্লেট রাখতে হবে ৷ তেমনই এই গাড়িগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য হলুদ রং করতে হবে ৷ গাড়ির বাইরের দিকে স্কুল বাস কথাটি লিখতে হবে । ঠিক একইভাবে বাচ্চাদের জন্য গাড়ির মধ্যে একজন মহিলা সহকারী বা মহিলা অ্যাটেনডেন্ট রাখতে হবে।
এই প্রসঙ্গেই, পুলকারস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত জানান, যে গাইডলাইনটি প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বিভিন্ন বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ একাধিক পুলকারের ক্ষেত্রে কী কী পরামর্শ মানতে হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, "যে একটি পুলকার যদি শুধুমাত্র বাচ্চা আনা-নেওয়া করে সেই ক্ষেত্রে তাঁদের আয় ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই অন্যান্য জায়গায় যদি সেই গাড়ি ব্যবসা না-করে, তবে তাঁদের শুধুমাত্র পুলকারের ব্যবসার উপর নির্ভর করে সংসার চালাতে হবে ৷ যা এক প্রকার দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। তাই যদি আগামিদিনে গাড়িগুলিকে নীল-হলুদ রং করতে হয়, তাহলে সেই গাড়ি স্কুল ছাড়া আর কোথাও ব্যবসার কাজে ব্যবহার করা যাবে না।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এমনিতে পুলকারে সাধারণত বেশি আসন বা জায়গা থাকে না ৷ সেক্ষেত্রে সহকারী রাখতে হলে তাঁর জন্য একটি আসন নির্দিষ্ট করতে হবে ৷ তেমনই তাঁকে বেতন দিতে হবে। সেই খরচ চালিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয় ৷ এই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে দ্রুত পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন সুদীপ দত্ত।
পরিবহণ বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, যে এই গাইডলাইনের মধ্যে অনেকগুলি যেমন শুধু বাসের জন্য প্রযোজ্য তেমনই বেশ কিছু পুলকারের জন্য প্রযোজ্য। তবে বাচ্চাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে সকলকে এই গাইডলাইন মান্যতা দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে পরিবহণ দফতর।