কলকাতা, 4 অক্টোবর: জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে । কর্মবিরতিকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে মামলা দায়ের করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৷ জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিতে মামলায় আবেদন করা হয় ৷ মামলাটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য শুক্রবার প্রধান বিচারপতির এজলাসে উত্থাপন করা হবে ।
চিকিৎসকদের আন্দোলনের অধিকার আছে ৷ পাশাপাশি, চিকিৎসা দেওয়া তাঁদের দায়িত্ব ৷ সেই দায়িত্বে তাঁরা শপথ নিয়েছেন । সেই দায় তাঁরা এড়াতে পারেন না বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায় । একই সঙ্গে, এই আন্দোলনের জন্য যে আর্থিক অনুদান আসছে, তার নয়ছয়ের আশংকা করা হয়েছে মামলায় । ফলে সেই টাকার হিসাব নেওয়ারও আবেদন করা হয়েছে আদালতের কাছে ।
মামলাকারী রাজু ঘোষের বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আগেই নির্দেশ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি তুলে নিয়ে কাজে ফিরতে হবে । তা সত্ত্বেও, তাঁরা ফের কর্মবিরতি শুরু করেছেন ৷ এতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অবমাননা করা হয়েছে ।
রাজুর আর্জি, চিকিৎসকরা শীর্ষ আদালতের নির্দেশ না-পালন করলে রাজ্য সরকার যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে, সেই নির্দেশ দিক হাইকোর্ট ৷ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে মামলা দায়ের করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, 9 অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর একাধিক দাবি নিয়ে কর্মবিরতির ডাক দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা । কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর আংশিক কর্মবিরতি তুলে নিয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ।
কিন্তু রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তার যে দাবি তাঁরা তুলেছিলেন, সেই সংক্রান্ত কাজ এখনও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি বলে অভিযোগ জুনিয়র ডাক্তারদের ৷ দশ দফা দাবিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দু'বার ইমেল করার পরও মেলেনি উত্তর ৷ তার মধ্যেই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে আক্রান্ত হন চিকিৎসক-নার্সরা ৷ সেই ঘটনার পর ফের কর্মবিরতির ঘোষণা করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷
তাই ফের পূর্ণ কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয় জুনিয়র ডক্টরস্ ফ্রন্ট ৷ মামলাকারীর বক্তব্য, এই কর্মবিরতির জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে । একই সঙ্গে, হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে রোগীমৃত্যুর সংখ্য়া বাড়ছে ।