চন্দ্রকোনা, 1 অক্টোবর: ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং স্মার্ট টিভির যুগেও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ শুনতে একমাত্র ভরসা রেডিয়ো ৷ রাত ফুরোনোর অপেক্ষা ৷ মহালয়ার ভোরে বাড়িতে রেডিয়োর নস্টালজিয়ায় ডুব দিতে আগেভাগে রেডিয়ো সারাইয়ের দোকানে ভিড় হয় ৷ রেডিয়ো-টিভি মেরামতির দোকানগুলিতে জোরকদমে চলছে রেডিয়ো সারানোর কাজ ৷
মহালয়া আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ যেন সমার্থক ৷ বহু বাড়িতে বছরে এই একদিনই রেডিয়ো চালানো হয় ৷ রেডিয়োর চাহিদা ক্রমশ কমে চলেছে ৷ কার্যত বিলুপ্তির পথে ৷ যুগের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে বেড়েছে স্মার্টফোন ও স্মার্ট টেলিভিশনের দাপট ৷
সারা বছর গৃহস্থের ঘরের এককোনে নীরবে ধুলোবালি মেখে পড়ে থাকলেও বছরের একটা সময় ধুলো ঝেড়ে আজও সচল হয়ে উঠে রেডিয়ো ৷ যুবসমাজের মধ্যে তেমন আগ্রহ না থাকলেও, আজও বয়স্ক মানুষেরা মহালয়ার আগে রেডিয়ো সারাতে দোকানে ভিড় জমান ৷ মহালয়াতে রেডিয়োর মাধ্যমে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠের চণ্ডীপাঠ শুনতে আজও ভালো লাগে, দাবি প্রবীণদের ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণার ক্ষীরপাই, গোঁসাইবাজার, রেগুলেটেড মার্কেটের মতো বাজারগুলিতে থাকা ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী মেরামতের দোকানগুলিতে তাই অন্য কাজ ফেলে মেকানিকরা ব্যস্ত রেডিয়ো সারাইয়ে ৷ এ নিয়ে কারিগর ও রেডিয়ো বিক্রেতারা মোটামুটি একমত, রেডিয়োর চাহিদা শুধুমাত্র এই একদিন ৷
রেডিয়ো সারাইয়ের কারিগর পিন্টু রায় বলেন, "এবছর মহালয়ার আগে 10-12টা রেডিয়ো সারিয়েছি ৷ যদিও এটা আগের বারের থেকে অনেকটা কম ৷ এই সময় 20-30টি করে রেডিয়ো আসত ৷ মানুষের হাতে মোবাইল এসে গিয়েছে ৷ প্রবীণরাই আসেন রেডিয়ো সারাতে ৷"
আরেক রেডিয়ো মেরামতির কারিগর সঞ্চয় হাউসি বলেন, "এখন তো রেডিয়ো কেউ চায় না ৷ কিছু প্রবীণ মানুষের কাছে রেডিয়ো রয়েছে ৷ তাঁরা এতে নিয়মিত খবর শোনে ৷ কিন্তু রেডিয়ো গুরুত্ব পায় মহালয়ার সময় ৷ তখন নবীন-প্রবীণ প্রত্যেকে মিলে রেডিয়োয় মহালয়া শোনে ৷ টিভির থেকেও রেডিয়োর গুরুত্ব এই সময় বেশি হয় ৷ কারণ, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহালয়া সবার ভালো লাগে ৷"