কলকাতা, 4 জুন: 'মানুষ মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে' লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর কার্যত এই ভাষাতেই বিজেপিকে খোঁচা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সেই সঙ্গে, তমলুক এবং কাঁথির ভোট নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি ৷ তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ, দুই জায়গাতেই রিগিং করে ভোটে জিতেছে বিজেপি ৷ এমনকী সেই প্রসঙ্গে সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, "সব থেকে বেশি অত্য়াচার বাংলার উপরে হয়েছে ৷ কিছু আসনে তৃণমূলকে হারানো হয়েছে জোর করে ৷ দিল্লির বোঝা উচিত রিগিং করে জেতা যায় না ৷ তবে আমি খুশি মোদিজি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি ৷ ওঁর নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে এখনই পদত্য়াগ করা উচিত ৷"
লোকসভা নির্বাচনের সব খবর পড়ুন এখানে
এদিন লোকসভা ভোটে বাংলার চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে ইন্ডিয়া জোটের প্রসঙ্গেও মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোটের নিরীখে দেখা যাচ্ছে, সংসদে দেশে চতুর্থ বৃহত্তম দল হিসাবে উঠে এসেছে জোড়াফুল শিবির ৷ 29টি সাংসদ নিয়ে দিল্লিতে যাচ্ছে তৃণমূল ৷ হেরে গিয়েছেন খোদ অমিত শাহের ডেপুটি নিশীথ প্রামাণিক থেকে শুরু করে আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকারের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীরা ৷
এরপরই ইন্ডিয়া জোটের বিষয়ে মুখ খোলেন মমতা ৷ আগামিকাল বুধবারই ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক আচে দিল্লিতে ৷ সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "রাহুলকে আমি অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছি ৷ তাও ওরা এখনও আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি ৷ তাতে আমার কিছু যায় আসে না ৷ ?" এরপর রাজ্যে কংগ্রেসের ফল নিয়েও কটাক্ষ করেন মমতা। পাশাপাশি জানান, কংগ্রেসকে দুটি আসন ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কংগ্রেস রাজি হয়নি। কিন্তু ফল দেখে কংগ্রেস নিজেদের ভুল বুঝতে পারছে বলে তাঁর দাবি।
এরই পাশাপাশি কিছুটা সুর চড়িয়েই মমতা বলেন, "আগামিকাল কখন বৈঠক আমি জানি না ৷ কেউ আমাকে কেউ কিছু জানাননি ৷ জানাতে হবে তো ! কোথায় কখন বৈঠক আমি কিছুই জানি না ৷ যদি অভিষেক যেতে পারে সেটা ওকে বলব ৷ আমি কালকে যেতে পারব না জোটের বৈঠকে ৷ অন্য কাজও তো আছে ৷ তবে ইন্ডিয়া জোটের সকলকে সমর্থন করব ৷ আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেল ৷"
শুধু তাই নয়, বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ কেন্দ্রে সরকারে এলেও তাদের যে অনেক ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হতে হবে তাও সাফ করে দিয়েছেন মমতা ৷ তৃণমূল সুপ্রিমোর কথায়, "সিবিআই-ইডি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অত্য়াচার করেছে ৷ তমলুকে পুনর্গণনা হলে দেখা যাবে সেখানে বিজেপি হেরে গিয়েছে ৷ যে সন্দেশখালিতে অপপ্রচার হয়েছে মা-বোনদের অপমান করা হয়েছে, সেখানেও আমরা জিতেছি ৷ সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি সুতরাং যেমন খুশি আইন পাশ করানো যাবে না, আমরা ইন্ডিয়া জোট চেপে ধরব ৷ এখন নীতিশ, টিডিপির পায়ে ধরতে হচ্ছে ৷ আমারও অহংকার করা উচিত নয় ৷ মোদি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন ৷"