হাবড়া, 17 অগস্ট: ভেন্টিলেশনে থাকা 21 দিনের অসুস্থ শিশু সন্তানকে ঝুঁকি নিয়েই রাজ্যের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হলেন অসহায় বাবা-মা ৷ সুরক্ষার অভাবে অসুস্থ ওই সদ্যজাতকে ভর্তি করালেন কয়েক কিলোমিটার দূরের হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে । আপাতত সেখানেই চিকিৎসা চলছে শিশুটির ।
উত্তর 24 পরগনার হাবড়া থানার মছলন্দপুরের বাসিন্দা পিয়ালি বিশ্বাস ৷ আরজি কর হাসপাতালে সময়ের আগেই শিশুর জন্ম দেন তিনি । মাত্র 21 দিন বয়স শিশুটির ৷ জন্মের পর থেকেই ওজন কম ছিল। সঙ্গে ছিল প্রবল শ্বাসকষ্ট । সেকারণে সদ্যজাতকে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসা চালানো হচ্ছিল ৷ অসুস্থ ওই শিশুটির সঙ্গে হাসপাতালে ছিলেন তার মা পিয়ালী বিশ্বাস ৷ বাবা সাগর বিশ্বাস হাসপাতালের বাইরে ছিলেন । মহিলা চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রতিবাদে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি শুরু হয় ৷ তার মধ্যে চিকিৎসা চললেও 14 অগস্ট রাতে লাঠি হাতে ঢুকে হাসপাতালের ভিতরে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী ৷ সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা পিয়ালি-সাগর বিশ্বাসের মনে।
এরপরই আতঙ্কিত চিকিৎসকরা হাসপাতালে সুরক্ষার অভাববোধ করেন। বিষয়টি জানানো হয় অসুস্থ শিশুর বাবা-মা'কে ৷ সদ্যজাতকে অন্য কোথাও নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার পরমর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ৷ সেই মত বৃহস্পতিবার একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ওই সদ্যজাতকে নিয়ে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷
ভয়ংকর সেই রাতের ঘটনার কথা বলতে গিয়ে এখনও চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট সাগর বিশ্বাসের। তিনি বলেন, "ঘটনার রাতে হাসপাতালের বাইরে ছিলাম ৷ দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালাচ্ছিল ৷ ইট-পাটকেল ছোড়ে। পুলিশের গাড়িও উল্টে দেয়। নিজের চোখে যা দেখেছি, কীভাবে ওই হাসপাতালে নিজের সন্তানকে রাখব ? রোগীর পরিবারও বা কীভাবে হাসপাতালের বাইরে থাকবে ? আতঙ্কের সেই পরিবেশ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।" সদ্যজাত শিশুটির মা পিয়ালি বিশ্বাস বলেন, "ভয়ে সেদিন সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারিনি। কখন কী হয় এই ভেবে। হাসপাতালে ভাঙচুর করার সময় বোমা বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েছিলাম । তাণ্ডব চালানোর সময় ওরা বলছিল, কোন কিছুই মানব না । সবাইকে মারব ।"