চন্দননগর, 18 নভেম্বর: চন্দননগর হাসপাতালের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ । মৃতের নাম প্রকাশ বাইন (43) । বাড়ি মানকুন্ডুর ঝিলপাড়ে । তিনি গাড়ি চালাতেন । চন্দননগর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে পেটে ব্যথা ও বমি নিয়ে চন্দননগর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রকাশ বাইন । রবিবার রাত 1টার পর হটাৎই মেল ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যান তিনি । টেবিল থেকে ধারালো কিছু নিয়ে অন্য রোগী ও নার্সদের আক্রমণ করতে উদ্যত হন । সকলকে ভয় দেখান । ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন । নার্সিং স্টাফদের ঘরের ভিতর দিয়ে গিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে উঠে যান তিনি ।
পরে চন্দননগর মহকুমার হাসপাতালে তিনতলার ছাদ থেকে তিনি ঝাঁপ দেন বলে অভিযোগ । প্রকাশ বাইনকে উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা করা হয় ৷ অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানোর পর রাত তিনটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর । রাতেই এই ঘটনার খবর দেওয়া হয় রোগীর পরিবারকে । তবে রোগীর আত্মীয়রা প্রশ্ন তোলেন, ছাদের দরজা কেন খোলা ছিল ?
প্রকাশ বাইনের স্ত্রী মিঠু বলেন, "বমি ও পেটে ব্যথা নিয়ে স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম । রবিবার রাতে হাতে ধারালো কিছু নিয়ে ভয় দেখাচ্ছিল সকলকে । তখনই ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যায় । কী করে মৃত্যু হল সেটা পরিষ্কার নয় । তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আরও বেশি সজাগ থাকার দরকার ছিল ।"
রাতের ঘটনার পর সকালে হাসপাতালে আসেন হুগলির জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মৃগাঙ্কমৌলী কর । তিনি হাসপাতাল সুপারকে নিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন । কী করে এই ঘটনা ঘটল খতিয়ে দেখছে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ ।
চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের সুপার সন্তু ঘোষ বলেন, "প্রকাশ বাইন মদ্যপান করত । তাঁর মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না । হাতে একটা ধারালো কিছু নিয়ে পালিয়ে যায় । ভয়ে কেউ কাছে আসতে পারেনি । কিন্তু কী করে ছাদে উঠেছিল বলতে পারব না । হাসপাতালের পিছন দিকে উপর থেকে ঝাঁপ দেয় সে । পরে রোগীকে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন ।"
এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি-সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলি । বিজেপি নেতা গোপাল চৌবে বলেন, "এর আগে চন্দননগর হাসপাতালের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে । হাসপাতালের নিরাপত্তা কিছু নেই । সেই কারণে হাসপাতালের ছাদের উপর থেকে রোগী ঝাঁপ দিয়েছে । হাসপাতাল চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই সুপার ।"
রোগী মৃত্যুতে নিরাপত্তার দাবিতে বামেরা সোমবার বিক্ষোভ দেখায় চন্দননগর হাসপাতালের গেটে । তাদের দাবি, রোগীর নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিতে হবে, মৃতের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করতে হবে, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করতে হবে ৷ এ দিন রোগী কল্যাণ সমিতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভ করে সিটু । আরজি করের ঘটনার পর হাসপাতালগুলোতে রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নেই বলে দাবি তাদের ৷