কলকাতা, 12 সেপ্টেম্বর: একরত্তি মেয়েটা । বয়স বড়জোর 10 বছর । দক্ষিণ 24 পরগনার কাকদ্বীপ থেকে এসেছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে । নিজের চিকিৎসার জন্য । বাবা মায়ের কাছে ঝোঁক একটাই, আরজি করের নির্যাতিতাকে সে দেখতে চায় । আর সেই জেদের কাছে বসবর্তী হয়, সেই ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে আরজি কর হাসপাতাল আসেন তার বাবা-মা ।
দিন দুয়েক আগেই ঘটনাটি ঘটে ৷ কিশোরী কন্যাকে নিয়ে তার বাবা-মা দিনভর বসে ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের পাশে । না, কিশোরী কন্যার দেখা হয়নি নির্যাতিতার সঙ্গে । সেটা সম্ভবও নয় আর ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায় সেই সেমিনার হল দেখতে চাইলেও তাকে দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়নি । শুকনো মুখেই ফিরতে হয় পরিবারকে । কিন্তু এই ঘটনা এই পরিস্থিতিতে নজিরবিহীন উদাহরণ হয়ে রয়ে গেল ।
মেয়ের পায়ের সমস্যা আর সেই কারণেই কাকদ্বীপ থেকে এক মসজিদের ইমাম সাহেব আব্দুল মাহমুদ খান সস্ত্রীক এসেছিলেন নিজের মেয়েকে নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে । কিন্তু চিকিৎসার পরেই ছোট্ট একরত্তি 10 বছরের মেয়েটি জেদ ধরে আরজি কর হাসপাতালে যেতে চায় । অনেক বুঝিয়েও মা-বাবা শান্ত করতে পারিনি ছোট্ট মেয়েটিকে । অগত্যাই আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে আসে নিজের ছোট্ট দশ বছরের মেয়েটিকে ।
সে দাবি করে, সে নির্যাতিতাকে দেখতে চায় । কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব ন য়৷ তাই তাকে ধরনা মঞ্চ ঘুরিয়ে দেখান মা-বাবা ৷ মেয়েটি আবদার সেই সেমিনার হল সে দেখতে চায়, যেখানে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছিল চিকিৎসককে । কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় সেটুকুও দেখা সম্ভব হয়নি । দশ বছরের মেয়ে সে হতাশগ্রস্থ হয়ে পড়ে । শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার ট্রেন ধরে বাবা মায়ের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যায় সে ।
আরজি কর হাসপাতালের বাইরে বসে তার বাবা এবং মা দুজনে জানিয়েছেন, রাজ্যজুড়ে যে আন্দোলন চলছে, তা গভীরভাবে দাগ কেটে গিয়েছে তাদের ছোট্ট 10 বছরের মেয়ের মনে ৷ সেও চাইছে আরজি করের নির্যাতিতা বিচার পাক । আর সেই কারণেই নিজে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেও আরজি কর হাসপাতালে সে দৌড়ে আসে তিলোত্তমাকে দেখার জন্য । কিন্তু তাকে বারবার বুঝিয়েও কোনও লাভ হয়নি ।
মেয়েটির বাবা বলেন, ‘‘ধর্মীয় গুরু হিসেবেই হোক কিংবা পারিবারের কর্তা হিসেবেই হোক, আমরা চাইছি আরজি করের নির্যাতিতা বিচার পাক, দোষীরা শাস্তি পাক এবং সমাজের মাঝে একটি দৃষ্টান্তমূলক বিচার ব্যবস্থা গড়ে উঠুক ।’’