রায়গঞ্জ, 8 অক্টোবর: আরজি কর কাণ্ডে এখনও মেলেনি সুরাহা ৷ হাসপাতালে সুরক্ষার দাবিতে এখনও প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা ৷ এই আবহে রাজ্যে ফের আক্রান্ত কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসক ও নার্স ৷ রোগীর মৃত্যতে তাঁদের হেনস্তার অভিযোগ উঠলো মৃতের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য রায়গঞ্জ সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় রায়গঞ্জ থানার পুলিশ । হেনস্তার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। পাশাপাশি রায়গঞ্জ মেডিকেলেও 12 ঘন্টার অনশন কর্মসূচি পালন করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, 6 অক্টোবর দুপুরে পেটে জল অবস্থায় 62 বছরের নুরনেহা খাতুনকে নিয়ে আসে তাঁর পরিবার ৷ বৃদ্ধা রায়গঞ্জ থানার বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের কুমারজল গ্রামের বাসিন্দা ৷ ভর্তির পরে নুরনেহা খাতুন ভালোই ছিলেন ৷ এমনকী, সোমবার দিনভর তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালোই ছিল ৷ রাতে কর্তব্যরত নার্স তাঁকে স্যালাইন দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই মারা যান ওই বৃ্দ্ধা বলে অভিযোগ তাঁর ছেলে মোহম্মদ নাজিমের ৷
মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই হাসপাতালে ছুটে আসেন নুরনেহার পরিবারের সদস্যরা ৷ কর্তব্যরত নার্স ও মহিলা চিকিৎসকের উপর মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়ে চড়াও হন তাঁরা ৷ সেই সঙ্গে, নার্স ও চিকিৎসককে হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ ৷ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতাল চত্বরে ।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ । পুলিশকর্মীরা আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । আক্রান্ত নার্স জানান, রোগীর অবস্থা আগের থেকেই খারাপ ছিল ৷ আর সেই বিষয়টি তাঁর পরিবারের লোকজনদের জানানো হয় ৷ তিনি বলেন, "তাঁকে সুস্থ করার জন্য যা প্রয়োজন তাই করেছি ৷ পরিষেবা দেওয়ার পরও হঠাৎ করে ওই রোগীর মৃত্যু হয় । তারপরই মৃত রোগীর প্রায় 10-15 জন আত্মীয় আমাদের উপর চড়াও হয় ৷ আমাদের গালিগালাজ করেন ৷"
ঘটনার সময় নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ করেন আক্রান্ত নার্স ৷ তাঁর অভিযোগ, "মার খাওয়ার জন্য তো হাসপাতালে কাজ করতে আসি না আমরা ৷ আমাদের নিরাপত্তা কোথায় ! আজ আমাদের সঙ্গে যা ঘটেছে, আগামী দিনে যেন কারও সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে ৷" তিনি আরও অভিযোগ করেন, ঘটনার অনেক পরে পুলিশ এসেছে ৷
অন্যদিকে, মৃত বৃদ্ধার ছেলে মোহাম্মদ নাজিম বলেন, "আমরা শুধু মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়েছি ৷ আমরা কাউকে হেনস্তা করিনি ৷" ভারপ্রাপ্ত এনএসডিপি ডাঃ বিদ্যুৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "চিকিৎসক ও নার্সের উপর হেনস্থা নতুন ঘটনা নয় ৷ নিরাপত্তাহীনতায় আমিও ভুগছি । সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই ঘটনাটি ঘটল, সেটা আমার জানা নেই । থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে ।"