ডানকুনি, 14 নভেম্বর: আর্থিক অবস্থা খারাপ ৷ স্ত্রী'র চিকিৎসার জন্য শেষে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে টোটো করেই মুর্শিদাবাদ থেকে বেরিয়েছিলেন উপেন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে বর্ধমান পরে ডানকুনিতে গিয়ে টোটোর চার্জ শেষ হয়ে যায়। বুধবার রাতে অসহায় অবস্থায় ঘোরাঘুরি করছিলেন ৷ খাবার পর্যন্ত জোটেনি। পরে স্থানীয় মানুষ ও ডানকুনি পুরসভার চেয়ারপার্সনের আর্থিক সাহায্যে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতায় পাঠানো হয় রোগীকে।
প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতাল পরে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন শিবানী বন্দ্যোপাধ্যায়। মুর্শিদাবাদের সালারে বাসিন্দা উপেন। স্ত্রী শিবানী কিডনির অসুখে ভুগছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে দেখিয়েছিলেন। তাতে লাভ হয়নি। কয়েকদিন ধরে স্ত্রী'র শরীর হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম হাসপাতালে নিয়ে যান স্ত্রীকে। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্য়াল কলেজে রেফার করা হয়। কিন্তু সেখানেই চিকিৎসার খরচের কথা ভেবে পিছিয়ে যান উপেন। আরও পরে বুধবার বিকালে নিজের টোটো করে বেরিয়ে পড়েন উপেন ৷
টোটোর চার্জ শেষ হওয়ার কারণে রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় থামতে হয় তাঁকে। পরে প্রায় 16 ঘণ্টা পর হুগলির ডানকুনিতে টোটোর ব্যাটারি চার্জ শেষ হয়ে যায়। সেখানে চার্জ দিতে গেলে বিষয়টি জানতে পারেন স্থানীয়রা। ডানকুনি পুরসভার চেয়ারপার্সন হাসিনা শবনমের কাছে খবর যায়। চেয়ারপার্সন একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন। রাতেই স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতার মেডিক্য়াল কলেজের দিকে রওনা দেন উপেন বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, "স্ত্রী'র অসুস্থতা ও অর্থের অভাবে ছেলে অনিরুদ্ধর উচ্চমাধ্যমিকের পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া চাইছিল পাঁচ-ছয় হাজার টাকা। সেই ভাড়া দেওয়ার সংস্থান নেই। তাই স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পথে টোটো করে কলকাতায় রওনা দিয়েছি। ডানকুনির স্থানীয়রা কিছু টাকা তুলে দেন। খাবার ও জল দেন।"
ডানকুনি চেয়ারপার্সন হাসিনা শবনম বলেন, "একজন টোটো করে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে যাচ্ছিলেন কলকাতার হাসপাতালে। একথা জানতে পেরে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করি। মেডিক্যাল কলেজে গেলেও সেখানে ভর্তি করা যায়নি শিবানীদেবীকে। সেখান থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে অনেক ঘুরে অবশেষে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।"