কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: সকাল সকাল, স্কুলে স্কুলে বাগদেবীর আরাধনায় মজেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। রং-বেরংয়ের জামাকাপড় পরে বিদ্যালয়ে ভিড় জমিয়েছে পড়ুয়ারা। বাগদেবী বন্দনার জন্য বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় পরিকল্পনা। স্কুল সাজানো থেকে ঠাকুর আনা, অন্য স্কুলে নিমন্ত্রণ করতে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এবার প্রেক্ষাপটটা একটু ভিন্ন ৷ সদ্য শেষ হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা, আর পুজোর একদিন পর থেকেই শুরু হবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ফলে বহু স্কুল এতদিন বন্ধ ছিল। আবার বেশ কিছু স্কুল উচ্চমাধ্যমিকের জন্য নিরাপত্তা বলয় প্রস্তুত করছে। তাই প্রতি বছরের থেকে একটু কাটছাঁট এবছরের সরস্বতী পুজোয়।
এবছর বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের 175 বছর। তাই সব আনন্দের মাঝেই রয়েছে তার ছাপ। তা দেখা যাবে সরস্বতী পুজোর সাজেও। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শর্বরী ভট্টাচার্য বলেন, "175 বছর আগের কলকাতা এবং তখনকার বেথুন স্কুলকেই আমরা তুলে ধরছি। আমাদের ছাত্রীরা হাতে করে বেশ কিছু জিনিস বানিয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকার জন্য 2 তারিখ থেকে 12 তারিখ পর্যন্ত আমাদের স্কুল বন্ধ ছিল। তাই শুধুমাত্র গতকালই ওরা সাজানোর সময় পেয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে কতটা হয়ে উঠল তা জানি না। তবে ওরা চেষ্টা করেছে।"
একই অবস্থা কলেজ স্ট্রিটের হিন্দু এবং হেয়ার স্কুলে। হিন্দু স্কুলের বাংলা শিক্ষক স্বাগত বিশ্বাস বলেন, "আমাদের স্কুলে মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল। ফলে পরীক্ষা চলাকালীন পুজোর কাজ করা সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা শেষের পর আনুষাঙ্গিক কাজ মিটিয়ে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। অন্যান্য বছর পুজোর আগের দিন শুধু বাজার আর প্রতিমা আনা ছাড়া বড় কোনও কাজ থাকে না। এবারে প্যান্ডেলের কাজই শেষ হয়নি তারমধ্যেই পুজো শুরু করতে হল ৷"
সামনেই উচ্চমাধ্যমিক শুরু। একাদশ শ্রেণিরও পরীক্ষা রয়েছে। ফলে, এবারে পুজোর কাজে হাত লাগানোর মতো পড়ুয়ার সংখ্যা একেবারে হাতে গোনা। হেয়ার স্কুলের শিক্ষক পুষ্পল সরকারের কথায়, "এবার কোনওমতে পুজো করছি আমরা। মাধ্যমিকের সিট পড়েনি বলে এবারে পুজোটা করা সম্ভব হচ্ছে। অন্যবার, পুজোর সাজগোজ অনেক বেশি হয়। পরের দিন প্রতিমা বিসর্জন দিই আমরা। খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে মার্চ মাসে। শিক্ষকরা প্রায় সকলেই উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে ব্যস্ত। পড়ুয়াদেরও পরীক্ষার চাপ রয়েছে। ফলে, এবার সাহায্যটা এবার অনেকটাই কম পাচ্ছি আমরা।"
আরও পড়ুন: