দুর্গাপুর, 7 জানুয়ারি: রেলের উন্নয়ন হোক অসুবিধে নেই, কিন্তু পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নয় ৷ না-হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, এমনটাই দাবি দুর্গাপুরের আম্বেদকর কলোনি, সিনেমা হল রোডের রেল বস্তির বাসিন্দাদের । সোমবার দুর্গাপুরের 30 নম্বর ওয়ার্ড-সহ বেশ কিছু এলাকায় রেল কর্তৃপক্ষ আজ শেষ সময়সীমা দিয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করে ৷ প্রতিটা বাড়ির দেওয়ালে ক্রস সাইন করে দিয়ে যায় রেল কর্তৃপক্ষ ৷ আর এরপরই দুর্গাপুর নগর নিগমের 30 নম্বর ওয়ার্ডের আম্বেদকর কলোনি, গোপীনাথপুর, বীরভানপুর মৌজা-সহ বেশ কিছু ওয়ার্ডের মানুষ প্রতিবাদে সরব হন ৷
দেওয়ালে দেওয়ালে পড়ে পোস্টার । এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে রেলের কর্তারা আম্বেদকর কলোনিতে এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ৷ ভিড় বাড়তে থাকে স্থানীয়দের ৷ এই বিষয়ে রেলের দুর্গাপুরের আ্যসিস্ট্যান্ট ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার জে কে রাজ বলেন,"রেলের নিয়ম অনুযায়ী আমাদের জায়গায় যদি কোনও বাড়ি থেকে থাকে তাহলে তার জন্য পুনর্বাসন দেওয়া হবে না । রেল যদি নতুন কোনও জায়গা অধিগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে যাদের বাড়িঘর ভাঙা হয় তাদেরকে পুনর্বাসন দেওয়া হয় । আমরা কাল থেকেই কাজ শুরু করব । রেলের উন্নয়নের জন্য ইস্টার্ন রেলওয়ে সমস্ত রকম কাজ শুরু করে দেবে ।"
এদিকে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই ও জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় । বিষয়টি নিয়ে বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন,"আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ডিআরএম আসানসোলের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছি । রেলের বিকাশের জন্য জমির প্রয়োজন । আমাদের পক্ষের আমিন এবং রেল নিজস্ব আমিন থেকে এই এলাকার 10 জন প্রতিনিধিদেরকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার থেকে জমির জরিপের কাজ শুরু হবে । তাতে যে কয়েকটি ঘরভাঙা যাবে তা নিয়ে আমি এখানকার মন্ত্রী, আড্ডা কর্তৃপক্ষ এবং দুর্গাপুর নগর নিগমের সঙ্গে কথা বলব । রাজ্য সরকার যদি জমি দেন, আমি কথা দিচ্ছি গৃহহারাদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি করে দেব ।"
তবে এই ঘটনায় বিজেপি জেলা নেতৃত্ব প্রশ্ন তোলেন কেন আসানসোল ডিআরএম অফিসে গত বছর ডিসেম্বর মাসে আলোচনা হওয়ার পরও রেল কর্তৃপক্ষ সোমবার উচ্ছেদের মাইকিং করতে গেল ? সামনেই দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচন ৷ তার আগে রেলের উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি উচ্ছেদ ইস্যুকে সামনে রেখে নিজেদের কথা প্রচার করতে নেমে পড়েছেন । রেল বস্তির বাসিন্দা ইন্দামনি আগরওয়াল ও তনুশ্রী ঘোড়ুইদের কথায়, "আমাদের জীবন যায় যাক কিন্তু আমরা 1 ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না । এই জমিতে আমরা দীর্ঘ কয়েক দশক বসবাস করছি । এখানে পৌরসভার সমস্ত সুবিধা আমরা ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছি । আজ হঠাৎ করে রেলের এই উচ্ছেদ কেন ? আমরা যাব কোথায় ?"