কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালি ইস্যুতে রাজ্যকে তীব্র কটাক্ষ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ৷ কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই ৷ অথচ তৃণমূল সরকার বলছে সাত দিনের মধ্যে শেখ শাহজাহানকে খুঁজে বের করবে । তাহলে রাজ্য সরকার জানে শেখ শাহজাহান ঠিক কোথায় রয়েছে ৷ না-হলে কি করে সাত দিনের মধ্যে রাজ্য সরকার ওকে গ্রেফতার করবে বলছে ?
মঙ্গলবার বিজেপি-র একটি সাংস্কৃতিক শাখা 'খোলা হাওয়ার' পক্ষ থেকে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানেই উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ৷ এই মঞ্চ থেকেই একাধিক বিষয় নিয়ে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করেন তিনি।
সন্দেশখালি প্রসঙ্গে নির্মলা সীতারমন রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ৷ এই মঞ্চে তিনি দাবি করেন, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন ? মণিপুরকাণ্ডের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানান, স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে গিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন মণিপুরের ক্ষেত্রে । অথচ সন্দেশখালিতে 144 ধারা থাকা সত্বেও বিরোধীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না ৷ কিন্তু তৃণমূলের নেতারা সন্দেশখালিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
পাশাপাশি, সীতারমন এদিন ইন্ডিয়া জাস্টিস রিপোর্টের কথাও উল্লেখ করেন। সেই সমীক্ষা রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, পুলিশি নিরাপত্তা-সহ আইন শৃঙ্খলার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ তালিকার একেবারে নীচে রয়েছে। শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে 40 জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও এই বিষয় কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি না। কেন চুপ প্রশাসন সেই প্রশ্ন তুলেছেন অর্থমন্ত্রী? রাজ্য সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেই বলেন, "বাংলার দুর্নীতির কথা সারা দেশ জানে। বাংলায় এসে দুর্নীতির কথা বলা মানে মায়ের কাছে মাসীর গল্প করার মতো । আর কতদিন সহ্য করবেন আপনারা ?"
সেইসঙ্গে মনরেগা প্রকল্পের (100 দিনের কাজ) নিয়ে বলেন, "25 লক্ষ ভুয়ো জব কার্ডের নামে টাকা দেওয়া হয়েছে । প্রকৃত যারা টাকা পাবেন তাঁদের দেওয়া হয়নি। বরং রাজকোষ থেকে আবার টাকা নিয়ে প্রকৃত যাঁদের জব কার্ড আছে তাঁদের দেওয়া হয়েছে ।" উল্লেখ করেন, বেসরকারি প্রকল্প থেকে শুরু করে চা বাগানের জন্যও 100 দিনের টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই টাকারও নয়-ছয় হয়েছে বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী ।
পাশাপাশি এদিন কেন্দ্র সরকারের একাধিক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী ৷ দেশের সবকটি রাজ্য এই প্রকল্পগুলি পেয়ে উপকৃত হয়েছে কিন্তু বাংলা নিজেকে একাধিক জনমুখী প্রকল্প থেকে সরিয়ে রেখেছে বলেও দাবি করেছেন মন্ত্রী । এই প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের বিকাশ ও উন্নতির জন্য। আর এই রাজ্য সরে থেকে সাধারণ মানুষকে এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে থেকে বঞ্চিত করছে।
এই বিষয় তিনি অ্যাস্পিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট (Aspirational districts) এর কথা উল্লেখ করেন। দেশের সবকটি রাজ্য এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু বাংলা একমাত্র রাজ্য যে এই প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেনি । বাড়ি বাড়ি নলবাহিত জল বা জলজীবন মিশন পৌঁছে দিতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলা ।
আরও পড়ুন: