কলকাতা, 14 নভেম্বর: জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা কি কলকাতা তথা বাংলায় জাল বিস্তার করতে শুরু করেছে ? ওই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহ গ্রেফতার হওয়া চারজনকে জেরা করে এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজতে শুরু করেছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ ৷
ওই চার আল কায়দা জঙ্গিকে প্রথমে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশ ৷ তার পর তাদের এনআইএ হেফাজতে নেয় ৷ তখন জেরায় ওই সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সঙ্গে কলকাতা থেকে বাংলার যোগাযোগের বিষয়ে জানতে পারেন গোয়েন্দারা ৷ তার পর থেকে এনআইএ খতিয়ে দেখছে যে বাংলায় কতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে আল কায়দার জাল ৷
এনআইএ-র একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের নাম - মহম্মদ সজীব মিয়া, মুন্না খালিদ আনসারি ওরফে মুন্না খান, আজহারুল ইসলাম ওরফে খালিফুদ্দিন আনসারি ওরফে আকাশ খান ও আব্দুল লতিফ ওরফে মোমিনুন আনসারি ৷ এরা সকলেই বাংলাদেশের বাসিন্দা ৷ উত্তর 24 পরগনায় সীমান্ত পেরিয়ে এরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ করে ৷
এরা প্রত্যেকেই ভারতীয় উপমহাদেশের জন্য কাজ করা আল কায়দার সংগঠনের সঙ্গে জড়িত (আল কায়দা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্ট বা একিউআইএস)৷ প্রথমে তারা নিউ মার্কেটে যায় ৷ সেখানে একটি হোটেলে ছিল তারা ৷ হোটেলের মালিককে ইতিমধ্যেই এনআইএ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ৷ জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সূত্রে খবর, হোটেল মালিক জানিয়েছেন যে পরিচয়পত্র জমা দিয়েই ওই চারজন হোটেলে ঘর নিয়েছিল ৷ সেই নথি তদন্তকারীদের হাতে দিয়েছেন হোটেল মালিক ৷ তবে গোয়েন্দারা যাচাই করে দেখেছেন যে সেগুলি জাল নথি ৷
তদন্তে আরও অনেক তথ্য সামনে এসেছে বলে এনআইএ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ৷ ওই সূত্র জানাচ্ছে যে নিউ মার্কেট এলাকার একটি দোকান থেকে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বুক করেছিল ওই চারজন ৷ তাছাড়া অ্যাপ ক্যাব নিয়ে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ঘোরে ৷ হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনেও একাধিক জায়গায় যায় ৷ কিন্তু কোথায় কোথায় তারা গিয়েছিল, সেই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত তথ্য হাতে পায়নি এনআইএ ৷ আপাতত গোয়েন্দারা সেটাই খুঁজে দেখার চেষ্টা করছে ৷
একই সঙ্গে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন যে কলকাতার বেনিয়াপুকুরে একটি বাড়িতেও ছিল এই চার সন্দেহভাজন জঙ্গি ৷ বেনিয়াপুকুরের সেই বাড়িতেও হানা দেয় এনআইএ ৷ বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা ৷ তাঁর বয়ানও রেকর্ড করা হয়েছে ৷
কলকাতা তথা বাংলায় যে আল কায়দা জাল বিস্তারের চেষ্টা করছে, সেটা গুজরাত পুলিশের সাহায্যেই জানতে পেরেছে এনআইএ ৷ তবে এ রাজ্যে তদন্তের জন্য কলকাতা পুলিশের এসটিএএফের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছে ৷ তাদেরও সাহায্য নিচ্ছে ৷ যদিও এই নিয়ে কলকাতা পুলিশের এসটিএএফের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ৷