চুঁচুড়া, 17 মে: চারিদিকে কচু গাছের জঙ্গল ৷ প্রতিনিয়ত আবর্জনা ফেলার জায়গাও বটে ৷ প্রতিদিনের মতো সোমবার স্থানীয় বাসিন্দা হাসিনা মণ্ডল ব্যস্ত ছিলেন কাজে ৷ আচমকাই শুনতে পান ছোট্ট শিশুর কান্নার আওয়াজ ৷ চারিদিকে কোথাও কিছু দেখতে না পেয়ে ভয় পেয়ে যান প্রথমটায় ৷ পাশের বাড়ির এক ভাইকে নিয়ে তিনি কান্নার উৎস খোঁজার চেষ্টা করেন ৷ এরপর জঙ্গলের ভিতর ঢুকে যা দেখলেন, তাতে চমকে গেলেন ! প্লাস্টিকের ভিতর কাপড়ে মোড়া বড় পুঁটলি ৷ তা খুলতেই দেখা যায় নবজাতক কন্যা সন্তান ৷ এই ঘটনায় চুঁচুড়া পৌরসভার লেলিননগর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ৷
স্থানীয় বাসিন্দা হাসিনা বলেন, "কান্নার আওয়াজ অনেকক্ষণ ধরে শুনতে পারছিলাম ৷ তারপর ডোবা আর জঙ্গলের মতো জায়গায় কান্নার আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে যাই ৷ তখনই এই নবজাতক কন্যা সন্তানকে দেখতে পাই ৷ সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে ৷ শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ৷"
এলাকার আরেক বাসিন্দা মিন্টু দাস প্রশ্ন তোলেন, এমন ঘটনা কোন মা-বাবা করতে পারেন? ওইটুকুকে শিশুকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে গিয়েছে ৷ নিশ্চই রাতের অন্ধকারে বা ভোর বেলা করেছে ৷ যে কারণে কেউ কিছু দেখতে পাননি ৷ পুলিশের কাছে সকলের নম্বর দেওয়া হয়েছে ৷ হাসপাতালে সদ্যজাত কন্যা সন্তান চিকিৎসাধীন ৷ আপাতত সে ভালো আছে বলে জানা গিয়েছে ৷
এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষদের মধ্যে নিন্দার ঝড় উঠেছে। মেয়েদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে 'কন্যাশ্রী' ও কেন্দ্র সরকারের তরফে 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি তরফে শিশু সুরক্ষা নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। সরকারের একাধিক প্রকল্প থাকা সত্ত্বেও কন্যা সন্তান ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা রাজ্যের নানা প্রান্তে দেখা যায় ৷ এই সমস্যার সমাধান কোনও দিন সম্ভব কি না, তা সময় বলবে ৷