ETV Bharat / state

সন্দেহের বশে ঘুমন্ত যুবককে কুপিয়ে খুন প্রতিবেশীর - YOUNG HACKED TO DEATH

Young Man Killed in Malda: বেশ কয়েক বছর আগে যুবক সন্দেহ করেন তাঁর মায়ের সঙ্গে প্রতিবেশীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে ৷ এ নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসে ৷ পুরনো সেই বিবাদের জেরেই কী ঘুমন্ত যুবককে কুপিয়ে খুন ! ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ৷

Young Man Killed
মায়ের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে যুবককে খুনের অভিযোগ (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 24, 2024, 5:13 PM IST

মালদা, 24 জুলাই: মায়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে যুবকের ৷ এই সন্দেহেই ঘুমন্ত অবস্থায় ওই যুবককে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের ভেস্টপাড়ায় ৷

যুবককে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে (ইটিভি ভারত)

নিহত যুবকের নাম ছোটন মাঝি ৷ বয়স 28 বছর ৷ অভিযুক্ত সাগর মণ্ডল বর্তমানে পলাতক ৷ হদিশ নেই তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও ৷ এই ঘটনায় নিহত যুবকের বাবা রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ পুলিশ পলাতক অভিযুক্ত ও তাঁর পরিবারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ৷ নিহত যুবকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর তোরজোর শুরু করেছে পুলিশ ৷

কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে?

ছোটনের বাবা গোপেন মাঝি জানান, "তখন রাত প্রায় সাড়ে 11টা ৷ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছিলাম ৷ সেই সময় সাগর বাড়িতে আসে ৷ ছোটন কোথায় জানতে চায় ৷ আমি ওকে বলি, পাশের ঘরে ছোটন ঘুমোচ্ছে ৷ একথা বলে আমি ঘুমোতে চলে যাই ৷ খানিকবাদেই ছেলের চিৎকার শুনে দৌড়ে ওই ঘরে যাই ৷ দেখি, হাতে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে ছোটনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে যাচ্ছে সাগর ৷ আমি বাধা দিতে যাই ৷ কিন্তু ও আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ৷ সাগর ওখানে একাই ছিল ৷ আর কেউ ছিল না ৷ ও ছোটনের সারা শরীরে হাঁসুয়ার কোপ বসিয়ে দিয়েছিল ৷ গ্রামবাসীরা ছুটে এলে সাগর পালিয়ে যায় ৷ সঙ্গে সঙ্গে সবাই মিলে ছেলেকে প্রথমে রতুয়া হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখান থেকে মালদা মেডিক্যালে ৷ আজ ভোর তিনটেয় ছেলের মৃত্যু হয় ৷ আমি সাগরের ফাঁসি চাই ৷"

তবে কী কারণে এই খুন তা নিয়ে ছোটনের পরিবারের লোকজন কিছু বলতে পারেননি ৷ এমনকি সাগর এবং ছোটনের বিবাদের কারণ নিয়েও তাঁদের মুখে কুলুপ ৷ তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে সাগর সন্দেহ করেন, তাঁর মায়ের সঙ্গে ছোটনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে ৷ সেই সময় এ নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসে ৷ কিন্তু তারপর সেই ঝামেলা মিটে গিয়েছিল বলেই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা ৷

ছোটন ও সাগর একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতেন, দুই বাড়িতেও দু'জনের নাকি যাতায়াত ছিল ৷ সেকথা স্বীকার করছেন ছোটনের দিদি অনিমা মাঝিও ৷ তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন আগে সাগরের বাবার সঙ্গে ছোটনের একটা গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ কিন্তু এখন কোনও ঝামেলা ছিল না ৷ কী নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছিল, তা বলতে পারব না ৷ এমনিই হয়তো ঝগড়াঝাটি হয়েছিল ৷ গতকাল রাতে তারই বদলা নিল সাগর ৷ ওদের মধ্যে নতুন করে কোনও ঝামেলা হয়েছিল কিনা জানি না ৷"

ছোটন স্থানীয় একজন খাদ্যসামগ্রীর ডিস্ট্রিবিউটরের অধীনে কাজ করতেন ৷ তাঁর দাদা জীবন পরিযায়ী শ্রমিক ৷ দিল্লিতে কাজ করছেন ৷ ভাইয়ের খুনের খবর পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জীবন ৷ একই পাড়ায় বাড়ি সাগরের ৷ তিনি'ও পরিযায়ী শ্রমিক ৷ বেঙ্গালুরুতে কাজ করেন ৷ দু'বছর সেখানে কাজ করার পর কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরেছেন ৷ ফের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য রবিবার তিনি বেঙ্গালুরুগামী ট্রেনে চেপেও বসেন ৷ কিন্তু ফরাক্কায় ট্রেন থেকে নেমে ফের বাড়ি ফিরে যান ৷ সম্ভবত তখনই তাঁর মাথায় ছোটনকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল !

তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক সাগর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁদের পাশের বাড়িতেই থাকেন সোনিকা মণ্ডল ৷ তিনি বলেন, "আমি অসুস্থ ৷ আটদিন ধরে শরীর খুব খারাপ ৷ গতকাল ঠিক কী হয়েছিল জানি না ৷ তবে দু'তিন বছর ধরে সাগরদের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই ৷ ওঁদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে ৷ আজ সকাল থেকে ওদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না ৷ বাড়িতে তালা ৷"

রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের তরফে অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ তবে অভিযুক্তরা পলাতক ৷ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷ ছোটনের দেহের ময়নাতদন্ত করানোর ব্যবস্থা চলছে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷

মালদা, 24 জুলাই: মায়ের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে যুবকের ৷ এই সন্দেহেই ঘুমন্ত অবস্থায় ওই যুবককে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের ভেস্টপাড়ায় ৷

যুবককে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে (ইটিভি ভারত)

নিহত যুবকের নাম ছোটন মাঝি ৷ বয়স 28 বছর ৷ অভিযুক্ত সাগর মণ্ডল বর্তমানে পলাতক ৷ হদিশ নেই তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও ৷ এই ঘটনায় নিহত যুবকের বাবা রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷ পুলিশ পলাতক অভিযুক্ত ও তাঁর পরিবারের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে ৷ নিহত যুবকের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর তোরজোর শুরু করেছে পুলিশ ৷

কী হয়েছিল মঙ্গলবার রাতে?

ছোটনের বাবা গোপেন মাঝি জানান, "তখন রাত প্রায় সাড়ে 11টা ৷ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে যাচ্ছিলাম ৷ সেই সময় সাগর বাড়িতে আসে ৷ ছোটন কোথায় জানতে চায় ৷ আমি ওকে বলি, পাশের ঘরে ছোটন ঘুমোচ্ছে ৷ একথা বলে আমি ঘুমোতে চলে যাই ৷ খানিকবাদেই ছেলের চিৎকার শুনে দৌড়ে ওই ঘরে যাই ৷ দেখি, হাতে ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে ছোটনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে যাচ্ছে সাগর ৷ আমি বাধা দিতে যাই ৷ কিন্তু ও আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় ৷ সাগর ওখানে একাই ছিল ৷ আর কেউ ছিল না ৷ ও ছোটনের সারা শরীরে হাঁসুয়ার কোপ বসিয়ে দিয়েছিল ৷ গ্রামবাসীরা ছুটে এলে সাগর পালিয়ে যায় ৷ সঙ্গে সঙ্গে সবাই মিলে ছেলেকে প্রথমে রতুয়া হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখান থেকে মালদা মেডিক্যালে ৷ আজ ভোর তিনটেয় ছেলের মৃত্যু হয় ৷ আমি সাগরের ফাঁসি চাই ৷"

তবে কী কারণে এই খুন তা নিয়ে ছোটনের পরিবারের লোকজন কিছু বলতে পারেননি ৷ এমনকি সাগর এবং ছোটনের বিবাদের কারণ নিয়েও তাঁদের মুখে কুলুপ ৷ তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে সাগর সন্দেহ করেন, তাঁর মায়ের সঙ্গে ছোটনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে ৷ সেই সময় এ নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসে ৷ কিন্তু তারপর সেই ঝামেলা মিটে গিয়েছিল বলেই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা ৷

ছোটন ও সাগর একে অন্যের সঙ্গে কথা বলতেন, দুই বাড়িতেও দু'জনের নাকি যাতায়াত ছিল ৷ সেকথা স্বীকার করছেন ছোটনের দিদি অনিমা মাঝিও ৷ তিনি বলেন, "দীর্ঘদিন আগে সাগরের বাবার সঙ্গে ছোটনের একটা গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ কিন্তু এখন কোনও ঝামেলা ছিল না ৷ কী নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছিল, তা বলতে পারব না ৷ এমনিই হয়তো ঝগড়াঝাটি হয়েছিল ৷ গতকাল রাতে তারই বদলা নিল সাগর ৷ ওদের মধ্যে নতুন করে কোনও ঝামেলা হয়েছিল কিনা জানি না ৷"

ছোটন স্থানীয় একজন খাদ্যসামগ্রীর ডিস্ট্রিবিউটরের অধীনে কাজ করতেন ৷ তাঁর দাদা জীবন পরিযায়ী শ্রমিক ৷ দিল্লিতে কাজ করছেন ৷ ভাইয়ের খুনের খবর পেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন জীবন ৷ একই পাড়ায় বাড়ি সাগরের ৷ তিনি'ও পরিযায়ী শ্রমিক ৷ বেঙ্গালুরুতে কাজ করেন ৷ দু'বছর সেখানে কাজ করার পর কিছুদিন আগে বাড়ি ফিরেছেন ৷ ফের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য রবিবার তিনি বেঙ্গালুরুগামী ট্রেনে চেপেও বসেন ৷ কিন্তু ফরাক্কায় ট্রেন থেকে নেমে ফের বাড়ি ফিরে যান ৷ সম্ভবত তখনই তাঁর মাথায় ছোটনকে খুন করার পরিকল্পনা ছিল !

তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক সাগর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁদের পাশের বাড়িতেই থাকেন সোনিকা মণ্ডল ৷ তিনি বলেন, "আমি অসুস্থ ৷ আটদিন ধরে শরীর খুব খারাপ ৷ গতকাল ঠিক কী হয়েছিল জানি না ৷ তবে দু'তিন বছর ধরে সাগরদের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই ৷ ওঁদের সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে ৷ আজ সকাল থেকে ওদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না ৷ বাড়িতে তালা ৷"

রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের তরফে অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ তবে অভিযুক্তরা পলাতক ৷ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷ ছোটনের দেহের ময়নাতদন্ত করানোর ব্যবস্থা চলছে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.