মালদা, 31 মার্চ: সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলায় পা রেখে জোট ভবিষ্যতের কার্যত শেষ বার্তা দিয়ে গেলেন নওশাদ সিদ্দিকী ৷ ধৈর্য্যেরও একটা সীমা থাকা উচিত বলে মন্তব্য আইএসএফ নেতার ৷ তাঁর বার্তা নিশ্চিতভাবেই নতুন মাথাব্যথার কারণ বাম-কংগ্রেস শিবিরের ৷ যদিও এনিয়ে এখনও পর্যন্ত জেলা বামফ্রন্ট কিংবা কংগ্রেসের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷ তবে আইএসএফ মালদায় প্রার্থী দিলে তা মাথাব্যথার কারণ হতে পারে কংগ্রেস-তৃণমূলের ৷
রবিবার কালিয়াচকের নজরুল ভবনে অল ইন্ডিয়া সেকুলার ফ্রন্টের একটি সাংগঠনিক সভার আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেই সভাতেই প্রধান বক্তা ছিলেন নওশাদ সিদ্দিকী ৷ জেলায় এখনও পর্যন্ত নির্বাচনী ময়দানে না-নামলেও এদিনের সাংগঠনিক সভায় উপস্থিতির সংখ্যা বেশ ভালো ছিল ৷ সিদ্দিকী ছাড়াও মঞ্চে ছিলেন একাধিক দলীয় নেতা ৷
সভা শেষে ভাইজান বলেন, "দক্ষিণ মালদার বিভিন্ন স্তরের কর্মীদের নিয়ে একটি কর্মিসভা করা হল ৷ আমরা এবারের ভোটে দক্ষিণ মালদায় প্রার্থী দেব বলে মনস্থির করেছি ৷ তবে এখনও জোটের আলোচনা চলছে ৷ জোট ফলপ্রসূ হলে আমাদের কর্মীরা জোট প্রার্থীর সমর্থনে লড়াই করে এখানে বিজেপি-তৃণমূলকে পরাস্ত করতে প্রস্তুতি নেবে ৷ অন্যথায় আমাদের কর্মী-সমর্থকরা আমাদের প্রার্থীকে পার্লামেন্টে পাঠাতে ভূমিকা নেবে ৷ আমরা চাই এমন একজন পার্লামেন্টে যাক যে গঙ্গা ভাঙন থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানের কথা সংসদে তুলে ধরবে ৷"
তিনি আরও বলেন, "প্রকৃত অর্থেই সে জনগণের জনপ্রতিনিধি হবে ৷ আজ আমরা তারই প্রস্তুতি নিলাম ৷ এখনও জোটের আলোচনা চলছে ৷ আমরা আর দু’একদিন অপেক্ষা করব ৷ কারণ, অপেক্ষারও একটা সীমা থাকে ৷ বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেস ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করে দিয়েছে ৷ আমরা ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছি ৷ আর দু’একদিন অপেক্ষা করব ৷ জোট হলে ভালো, নইলে আমরা নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে দেব৷”
নওশাদ আরও বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে রাজ্যের আটটি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়েছি ৷ জোটের স্বার্থে আমরা ওই আটটিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাইছি ৷ যদি জোটের বড় দু'টো দল আমাদের সাইড লাইন কিংবা কর্নার করার চেষ্টা করে, মাত্র 3-4টি আসন আমাদের জন্য ছাড়ে, তবে আমাদের আসন সংখ্যা আটের জায়গায় ষোল বা তার বেশি হতে পারে ৷ এখানে বিভাজনের রাজনীতি করার প্রবণতা বাড়ছে ৷ বিজেপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে ৷ আর অ-বিজেপি দলগুলি বিজেপির ধর্মের রাজনীতিকে সামনে রেখে ভোট চাইছে ৷ এই রাজনীতি আমরা করতে দেব না ৷"
এরপর তিনি জানান, মানুষের রুজিরুটির কথা হোক ৷ পেটে খিদে রেখে ধর্ম হয় না ৷ সেই খিদে আগে নেভাতে হবে ৷ ধর্ম তার নিজের জায়গায় থাকুক ৷ আমাদের লড়াই শুধু বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, বিজেপিকে যারা এই রাজ্যে নিয়ে এসেছে সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেও ৷ এই দুই দলকেই হারাতে হবে ৷ জোট ঘোষণা হলে প্রার্থীকে জেতাতে ময়দানে নেমে পড়বেন সকলেই ৷ নইলে নিজেদের ক্ষমতায় নিজেদের প্রার্থীর সমর্থনে লড়াই হবে ৷ এখন দেখার নওশাদের এই বার্তায় জোটের জাল কাটে কি না ৷
আরও পড়ুন:
1. ববির এলাকায় ভোট প্রচারে বাধা ! পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদ সায়রার
2. রেজিনগরে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা
3. বাংলায় ফের একা লড়ার বার্তা মমতার, জল্পনা বাড়ালেন 'ইন্ডিয়া'র ভবিষ্যৎ নিয়ে