কলকাতা, 20 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালির ঘটনায় পুলিশির গাফিলতির কথা ডিজি রাজীব কুমার স্বীকার করে নিয়েছেন বলে দাবি করলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা ৷ আজ তিনি ভবানীভবনে গিয়ে দেখা করেন রাজ্য পুলিশের ডিজির সঙ্গে ৷
সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান এবং তাঁর দলবলের তাণ্ডব এবং মহিলা নির্যাতনের অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই তোলপাড় গোটা রাজ্য রাজনীতি । সেই বিষয় নিয়েই আজ রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা করে ক্ষোভ উগড়ে দেন রেখা শর্মা । আজ বেলা একটা নাগাদ তিনি ভবানীভবনে যান । সেখানে গিয়ে রাজীব কুমারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ।
রেখা শর্মার দাবি, সন্দেশখালি নিয়ে নির্যাতিতাদের অবস্থা থেকে শুরু করে গোটা এলাকায় আইনশৃংখলার অবনতির কথা তুলে ধরতেই রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার পুলিশের গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেন । জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, যখন তিনি এই বিষয়ে শেখ শাহজাহানের নাম রাজীব কুমারের কাছে রাখেন, সেই সময় রাজীব কুমার রেখা শর্মাকে বলেন, এই ঘটনায় প্রথম এফআইআর করেছিল ইডি । ফলে শেখ শাহজাহানকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটই গ্রেফতার করবে । রেখা শর্মা দাবি করেছেন, রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার একপ্রকার মেনে নিয়েছেন যে, সেখানে পুলিশের গাফিলতি ছিল । যদিও এই বিষয়ে রাজীব কুমারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি । মেসেজেরও কোনও জবাব তিনি দেননি ।
আজ ধামাখালিতে ফের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সন্দেশখালি যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হয় ৷ তবে হাইকোর্টের অনুমতি দেখিয়ে ফের শুভেন্দু অধিকারী সরব হন । সেই সময় শুভেন্দু অধিকারীকে অবশেষে সন্দেশখালিতে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে । সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান ও তাঁর একাধিক সাগরেদ যে মহিলাদের উপর দিনের পর দিন, রাতের পর রাত শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেখানে গিয়ে সেই কথা জানতে পারেন বলে দাবি করেছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা । তাঁর কাছে স্থানীয় মহিলারা বলেছেন, বিভিন্নভাবে রাতে শেখ শাহজাহান-সহ তাঁর দলবলের মনোরঞ্জন এবং অন্যান্য নেতাদের বিভিন্ন রকমের আবদার মেটাতে হত গ্রামের মহিলাদের । অভিযোগ, প্রতিবাদ করলে কপালে জুটতো মারধর । শুধু শারীরিকভাবে নির্যাতনই নয়, মানসিকভাবে এবং আর্থিকভাবেও তাঁদের উপর অত্যাচার করা হত ৷
গতকাল থেকেই সরকারি কর্মীরা সন্দেশখালিতে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন যে, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা ওই মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকলেও পরে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁদের প্রাপ্য টাকা তুলে নিতেন শিবু হাজরা-সহ শেখ শাহজাহানের দলবলেরা । তাঁরা এই বিষয়ে প্রতিবাদ করতে পারতেন না এবং যেহেতু সেখানে পুলিশ প্রশাসন রয়েছে, ফলে তারা তাদের দ্বারস্থ হলেও পুলিশ তাঁদের অভিযোগ নিতে অস্বীকার করত বলে অভিযোগ উঠেছে ।
আরও পড়ুন: