কলকাতা, 15 ডিসেম্বর: জেলাশাসকদের কাছে পৌঁছে গেল বাংলা আবাস যোজনার টাকা ৷ তবে এখনই তা অ্যাকাউন্টে পাবেন না উপভোক্তারা ৷ ট্যাব কেলেঙ্কারির আবহে আরও সতর্ক নবান্ন ৷ তাই জেলাশাসকদের টাকা দেওয়ার পর ন-দফা গাইডলাইন দিয়েছে নবান্ন ৷
একদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে আবাস নিয়ে বিক্ষোভের খবর আসছে । এরই মাঝে শনিবার রাতেই নবান্নের নির্দেশে বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে গিয়েছে আবাসের টাকা । তবে আবাসের টাকা যে রবিবার থেকেই উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে এমনটা বলা যাচ্ছে না । বরং নবান্ন সূত্রে খবর, এক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে পঞ্চায়েত দফতরের থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময় চাওয়া হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলেই, তাঁর ঘোষণা মতোই ওই টাকা পৌঁছে যাবে সরাসরি 12 লক্ষ উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ।
সম্প্রতি ট্যাব বিতর্কের পর উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হয়েছে রাজ্য প্রশাসন । যেহেতু টাকার পরিমাণটা নিতান্তই কম নয়, প্রথম দফায় প্রায় 12 লক্ষ উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে যাবে সরাসরি 60 হাজার করে টাকা । তাই টাকা ছাড়ার আগে ন'দফা গাইডলাইন জারি করল নবান্ন ।
পঞ্চায়েত সচিব পি উল্গানাথনের সব জেলাশাসককে লেখা ওই গাইডলাইনে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের জন্য যে টাকা জেলাগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে, তা দ্রুত বিডিও স্তরে পৌঁছে দিতে হবে । একটি ব্লক বা একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকা দিতে গিয়ে যেন অন্য গ্রাম পঞ্চায়েতে টাকা না যায়, এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে বিডিওদের ।
আগামী মঙ্গলবার গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক রয়েছে নবান্নে । মনে করা হচ্ছে, ওই বৈঠকের পরই সরাসরি আবাসের টাকা পৌঁছে যেতে পারে উপভোক্তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে । সেক্ষেত্রে যে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠান করার কথা ভাবছে পঞ্চায়েত দফতর, তা হতে পারে মঙ্গলবারের পরেই । যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে প্রত্যেক জেলা থেকে অন্তত দু'জন করে উপভোক্তার হাতে আবাসের টাকা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে পঞ্চায়েত দফতরের ।
পঞ্চায়েত দফতর থেকে যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে তাতে জেলা প্রশাসনকে বলা হয়েছে, এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য দু'জন করে উপভোক্তার নাম চূড়ান্ত করতে । কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকার শংসাপত্র তুলে দেবেন । এই অনুষ্ঠানে উপভোক্তাদের হাজির করানোর প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে জেলাশাসককেই ।
এই নির্দেশিকার সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ অংশ হল, বাংলার বাড়ির তালিকায় নাম থাকা কোনও বৈধ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ার পর যাতে তিনি কোনোভাবে হুমকির শিকার না–হন, তা নিশ্চিত করতে চায় রাজ্য । এমন ঘটনা ঘটলে সরাসরি পুলিশের সাহায্য নিতে বলা হয়েছে । কেউ প্ররোচনা দিলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায় ।
বাড়ির তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরও কোনও উপভোক্তা সম্পর্কে কোনও সন্দেহ থাকলে, নাম দ্রুত সেই তালিকা থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে । প্রথম কিস্তির টাকা বিলির প্রক্রিয়া যাতে সুস্থভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেজন্য প্রতি ব্লকে একজন করে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, যাঁরা বাড়ি পাচ্ছেন, সেই সমস্ত উপভোক্তাদের অভিন্ন নম্বর পোর্টালে তোলার কাজ চলছে । এই কাজ সম্পন্ন হলে উপভোক্তাদের কাছে পোর্টাল থেকে এসএমএস পৌঁছে যাবে । আপাতত আবাস নিয়ে কোনও শিবিরের আয়োজন করার প্রয়োজন নেই ৷ তবে এই নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চায়েত সচিব ।