হাওড়া, 27 অগস্ট: নবান্ন অভিযানকে ঘিরে ধুন্ধুমার ! নবান্নের প্রায় দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল বিক্ষোভ ৷ নবান্নের মূল ফটক থেকে মাত্র 50 মিটার দূরে হাজির বিক্ষোভকারীরা ৷ 'ছাত্র সমাজ'-এর আন্দোলন ঠেকাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশকে ৷
আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান চালায় পুলিশ ৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি ৷ বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে মাথা ফাটে এক পুলিশ কর্মীর । আহত আরও এক পুলিশকর্মীকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বেশকয়েকজন পুলিশকর্মী-সহ আন্দোলনকারীদের অনেকেই আহত হয়েছেন ৷ বহু আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ ৷
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান করে 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ' ৷ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দিক থেকে নবান্নের দিকে এগিয়ে আসে মিছিল ৷ এদিন আন্দোলনকারীরা হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে নবান্ন যাওয়ার রাস্তায় ভেঙে ফেলেন একের পর এক ব্যারিকেড ।
সাঁতরাগাছির পাশাপাশি ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা শুরু হয় হাওড়ার মল্লিক ফটকে । পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানেও জলকামান ছোড়ে পুলিশ ৷ ফাটানো হয় টিয়ার গ্যাসের শেল । বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চলে ব্যাপক লাঠিচার্জ । আন্দোলনকারীদের লাঠিচার্জ করতে করতে মেট্রোর কাছাকাছি নিয়ে যায় পুলিশ । যদিও আন্দোলনকারীরা ফের পুলিশের দিকে এগিয়ে আসে এবং ইটবৃষ্টি শুরু করে । সাঁতরাগাছি রেলস্টেশনেও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে দেখা যায় ।
আন্দোলনকারীরা জনসমুদ্রের আকার ধারণ করে রামকৃষ্ণপুর ঘাটের কাছে । একাধিক আন্দোলনকারীদের আটক করেছে পুলিশ ৷ আন্দোলনকারীরা বসে পড়ে স্লোগান দিচ্ছেন । পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সরে যাওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছে । যদিও পুলিশের মাইকিং অগ্রাহ্য করেই আন্দোলনকারীরা পুলিশের সামনে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন । স্লোগান চলছে 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'৷ পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি । ক্রমে ঝাঁঝ বাড়তে থাকে আন্দোলনের ৷ সাঁতরাগাছি থেকে হাওড়া ব্রিজ, একের পর এক আসতে থাকে মিছিল ৷ বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে ৷
'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ'-এর ডাকে অভিযান ঘিরে নবান্নকে আজ কার্যত দুর্গে পরিণত করা হয় । কলকাতা থেকে হাওড়া - দিকে দিকে দেওয়া হয় ব্যারিকেড । শুধু তাই নয়, নজিরবিহীনভাবে মিছিল আটকাতে এজেসি বোস রোডের দুটি দিকেই নামানো হয় কন্টেনার । নবান্নমুখী একের পর এক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় । এজেসি বোস রোডও বন্ধ করে দেওয়া হয় । একটা সময়ের পর সাঁতরাগাছিতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয় । শুধু সরকারি বাসকে ছাড় দিয়েছিল পুলিশ । আপাতত গোটা রাস্তাই বন্ধ ।