ফরাক্কা, 25 অগস্ট: ফরাক্কা জলাধারের আপ স্টিম ও ডাউন স্টিমে গঙ্গা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে । ফরাক্কা ব্যারেজ বাঁচাতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে 11 লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে। যার ফলে ডাউন স্টিমে অধিকাংশ জায়গায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল। ফরাক্কা ব্যারেজ থেকে অতিরিক্ত জল ছাড়ায় ইতিমধ্যে প্লাবিত বাংলাদেশ। এবার মুর্শিদাবাদের সুতি, সামশেরগঞ্জ, রঘুনাথগঞ্জ, সাগরদিঘি এলাকার নদীপাড়ের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন ।
গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দা রাজকুমার মণ্ডল বলেন, "জল এইসময় অনেক নীচে থাকে ৷ তবে এখন গঙ্গার জল বাড়ছে ৷ জল 10 ফুটের মতো বেড়েছে ৷ ব্যারেজ থেকে জল ছেড়েছে ৷ বৃষ্টির জল এসে জমছে বলে জল ছাড়া হচ্ছে ৷ আমরা প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছি ৷"
গঙ্গা থেকে জল ঢুকছে বিভিন্ন গ্রামে ও মাঠে । প্লাবনের আশঙ্কা করছেন মুর্শিদাবাদের মানুষ। বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ গঙ্গার উচ্চ অববাহিকায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে । যার ফলে হুহু করে বাড়ছে গঙ্গার জলস্তর । ফরাক্কা ব্যারেজের আপ স্টিমে জল ধারণ ক্ষমতা 26.14 মিটার । বিপদসীমা 22.25 মিটার এবং সর্তকতা সীমা 21.25 মিটার । ইতিমধ্যে আপ স্টিমের ধারণ ক্ষমতা অতিক্রম করায় শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ গেট । শনিবার থেকে 11 লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে ব্যারেজ থেকে । প্রচুর জল বইছে বাংলাদেশের দিকে । বাংলাদেশ আগেই প্লাবিত হয়েছে । পদ্মায় জল বাড়ায় প্লাবনের পরিমাণ আরও বাড়ছে ।
অন্যদিকে, ডাউন স্টিমে নিমতিতায় সর্তক সীমা 20.58 মিটার ৷ বিপদসীমা 21.90 মিটার । নিমতিতায় জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে 11.51 মিটার উচ্চতায় । নুরপুরে বিপদসীমা 21.03 মিটার । জল বইছে 21.64 মিটার দিয়ে । সতর্কতা সীমা 20.73 মিটার ৷ গিরিয়ায় বিপদসীমা 20.94 মিটার । 21.55 মিটার উচ্চতায় জল বইছে । সতর্কতা সীমা 20.39 মিটার ৷ জঙ্গিপুরে গঙ্গার বিপদসীমা 20.29 মিটার । জল বইছে 20.87 মিটার উচ্চতা দিয়ে । সতর্কতা সীমা 17.80 মিটার ৷ একইভাবে লালবাগ, বহরমপুর, বেলডাঙা, শক্তিপুরে ভাগীরথীর জল বিপদসীমার উপর দিয়েই বইছে শনিবার থেকে ।
ফরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প সূত্রে জানা গিয়েছে, জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে । উচ্চ অববাহিকায় বৃষ্টির পরিমাণ না কমা পর্যন্ত জল ছাড়ার পরিমাণ কমবে না । গঙ্গায় হুহু করে জল বাড়ায় প্লাবনের আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা । তবে সেচ দফতরের দাবি, কোথাও কোথাও ধস নামলে বাঁধ ভাঙার মতো অবস্থা নেই । কোনও কোনও জায়গায় ভাগীরথী নদীর জল নদীগুলিতে উলটো দিকে ঢুকতে শুরু করায় মাঠ প্লাবিত হচ্ছে ।