চণ্ডীতলা, 6 ডিসেম্বর: বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ের মৃতদেহ আগলে রাখল মা ৷ ঘটনাটি চণ্ডীতলার কলাছড়া খানাবাটী এলাকার ৷ শুক্রবার আশেপাশের প্রতিবেশীরা বাড়িটি থেকে দুর্গন্ধ পায় ৷ বাড়ির ভিতরে যেতেই কান্নার আওয়াজ শুনে সন্দেহ হয় সবার ৷ খবর দেওয়া হয় পরিবারের আত্মীয় ও পুলিশকে ৷
প্রথমে মা অপর্ণা ঘোষ কাউকেই ঘরে ঢুকতে দিচ্ছিল না ৷ তালা দিয়ে নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিলেন ৷ পরে তাঁকে বুঝিয়ে বাড়ির তালা খোলানো হয় ৷ স্থানীয় অপর্ণা ঘোষকে ধরে রাখেন ৷ তখন পুলিশ ঘরে ঢোকে ৷ বাড়ির একটি ঘরে বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ে অরিত্রী ঘোষের (14) পচাগলা মৃত দেহ দেখতে পাওয়া যায় ৷ পুলিশ দেহ উদ্ধার করে পরিবারের হাতে তুলে দেয় ৷ যদিও এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়নি ৷
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর মেয়ে অরিত্রীর মা অপর্ণা মানসিকভাবে অসুস্থ ৷ সেই কারণে পরিবারের আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের কারও সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না ৷ কাউকেই বাড়িতে ঢুকতে দিত না মা ৷ তাই এই বাড়িটিতে কারও আসা-যাওয়া ছিল না ৷ তবে বিশেষভাবে সক্ষম মেয়েটি অসুস্থ ছিল ৷ পুলিশ মায়ের সঙ্গে কথা বলে ৷ প্রাথমিক ধারণা রোগের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বিশেষভাবে সক্ষম নাবালিকার ৷
নাবালিকার কাকা বিশ্বজিৎ ঘোষ পারিবারিক রেশনের দোকানের দেখাশোনা করেন ৷ তিনিই অরিত্রী ও মায়ের স্থানীয় অভিভাবক ছিলেন ৷ কিন্তু এই বাড়িতে থাকতে তিনি থাকতেন না ৷ আজ প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ছুটে আসেন কাকা বিশ্বজিৎ ঘোষ।
তিনি জানান, দাদা প্রভাস ঘোষের ক্যানসারে মৃত্যু হয়েছে ৷ তারপর থেকে বৌদি অপর্ণা বিশেষভাবে সক্ষম মেয়েকে নিয়ে এই বাড়িতেই থাকতেন ৷ প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল না অপর্ণা ঘোষের ৷ কাকা বিশ্বজিৎ বলেন, "অনেক দিন ধরে ওর মা তালা বন্ধ করে রেখে দিয়েছিলেন ৷ কাউকে ঢুকতে দিতেন না ৷ আমিও ঢুকতে পারি না ৷ আমি অন্য জায়গায় থাকি ৷ মাঝে যখন ভাইঝির শরীর খারাপ করেছিল, তখন অনেক কিছুই করেছি ৷ ওর মা আমায় ঘরে ঢুকতে দেয়নি ৷ আজ আমি সেই মানসিক অবস্থায় নেই ৷"