কান্দি, 10 ফেব্রুয়ারি: মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎ নাবালিকা প্রসূতির পেটে ব্যথা শুরু হয় ৷ তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে আসা হয় হাসপাতালে ৷ সেখানে বসেই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিল সে ৷ তবে প্রশ্ন উঠছে বাল্য বিবাহ নিয়ে ৷ যদিও মেয়েটির মায়ের যুক্তি, বাবা নেই বলে নাবালিকাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের কান্দির ৷
এই ঘটনার বিষয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, "পরিবারের লোক কীভাবে নাবালিকা অবস্থায় মেয়েকে বিয়ে দিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
সোমবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বাংলা পরীক্ষা ছিল 16 বছরের ওই নাবালিকার ৷ সেই মতো সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে চলে আসে সে ৷ তবে মাধ্যমিকের পরীক্ষা চলাকালীন আচমকা পেটে ব্যথা ওঠে তার । বিষয়টি জানানো হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে ৷ এরপরেই কান্দি থানার পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতায় তাকে সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে সরাসরি কান্দি মহকুমা হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয় । তারপর কান্দি মহকুমা হাসপাতালে বসেই চিকিৎসকের নজরদারি এবং একজন পরীক্ষকের উপস্থিতিতে মাধ্যমিকের বাংলা পরীক্ষা দেয় ওই ছাত্রী ।
নাবালিকার মায়ের কথায়, "16 বছর বয়সে মেয়ের বিয়ে হয় ৷ 10 মাস হল তার বিয়ে হয়েছে ৷ সে এখন 9 মাসের গর্ভবতী ৷ বর্তমানে মেয়ের বয়স 17 বছর ৷ আজ মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল সে ৷ সে সময় তার প্রসব যন্ত্রণা ওঠে ৷ পুলিশ নিয়ে এসে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে ৷ সেখানে বসেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয় মেয়ে ৷" নাবালিকা অবস্থায় মেয়েকে কেন বিয়ে দিয়েছেন, সেই প্রশ্ন করা হলে তার মা বলেন, "বাবা নেই ওর ৷ তাই ছোট বয়সে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছি ৷ আমাদের ওখানেই ওর বিয়ে হয়েছে ৷"
এদিনের ঘটনা নিয়ে স্কুল বা হাসপাতালের তরফে কোনও বক্তব্য মেলেনি ৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে, নাবালিকা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে ৷
উল্লেখ্য, এ বছর মুর্শিদাবাদ জেলাতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা 94 হাজার 448 জন । যার মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা রয়েছে 41 হাজার 695 জন । ছাত্রীর সংখ্যা 52 হাজার 753 জন । মুর্শিদাবাদ জেলাতে মোট 153টি পরীক্ষা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে । যার মধ্যে মোট ভেনু 86টি ও সাব ভেনু হল 77টি । ছাত্রছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলি ।