গাইঘাটা, 30 মে: সিএএ-র মাধ্যমে এবার নাগরিকত্ব পেলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের গৃহবধূ । ওই গৃহবধূর নাম শান্তিলতা বিশ্বাস । তিনি উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটা থানার ঠাকুরনগর বড়াকৃষ্ণনগরের বাসিন্দা । প্রায় দেড় মাস আগে তাঁর স্বামী ও তিনি অনলাইনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন । বুধবার তিনি নাগরিকত্ব পেলেও তাঁর স্বামী তারক বিশ্বাস পাননি । তবে নাগরিকত্ব পাবেন বলে আশাবাদী তারক ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের খুলনার বাসিন্দা তারক বিশ্বাস । তাঁর বয়স যখন 16-17 বছর, তখন বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন তিনি । উত্তর 24 পরগনার ঠাকুরনগরে বসবাস করেন এখন । বর্তমানে তারকের বয়স 59 বছর । একে একে এখানে তিনি তাঁর যাবতীয় কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন । বিয়ে করেছিলেন শান্তিলতাকে । শান্তিলতা জানান, বাংলাদেশে তাঁদের বড় পরিবার ছিল । সেখানে তাঁরা মাঝেমধ্যে অত্যাচারের শিকার হতেন । আর সেই কারণে বাবা-মায়ের সঙ্গে পালিয়ে ভারতে চলে আসেন ।
শান্তিলতা বিশ্বাসের কথায়, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি এবং তাঁর স্বামী তারক বিশ্বাস নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন । চলতি মাসের 27 তারিখ তাঁদের শুনানি হয় বারাসতে । গতকাল তিনি নাগরিকত্বের কার্ড হাতে পেয়েছেন । নাগরিকত্বের কার্ড পেয়ে খুশি বিশ্বাস দম্পতি ।
আরও পড়ুন:
শান্তিলতা দেবী নাগরিকত্বের পেলেও তাঁর স্বামী তারক বিশ্বাস পাননি । তারক জানান, তিনি নাগরিকত্বের জন্য ভারতীয় সমস্ত কাগজপত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশের জমির কাগজপত্র জেরক্স কপি দিয়েছিলেন । শুনানির দিন ভারতীয় সমস্ত কাগজপত্র আসল দেখাতে পারলেও বাংলাদেশের জমির আসল নথি দেখাতে পারেননি । সেই কারণে শুনানির সময় তাঁর নাগরিকত্ব আটকে যায় । তবে তাঁকে এক মাস সময় দেওয়া হয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের জমির কাগজপত্রের আসল কপি দেখাতে পারলে তিনিও নাগরিকত্ব পাবেন ।
তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে তিনি তাঁর বাংলাদেশের জমির আসল কাগজপত্র হাতে পেয়ে গিয়েছেন । জুন মাসের 21 তারিখ তাঁর পরবর্তী শুনানি রয়েছে ৷ সেদিন তিনি বাংলাদেশের জমির কাগজপত্রের আসল কপি দেখাবেন । এবং তিনিও নাগরিকত্ব পাবেন ।
বিশ্বাস দম্পতির দাবি, নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার পর তাঁদের কোনও ধরনের সুবিধা বন্ধ হয়নি । ভোট দেওয়া থেকে শুরু করে সমস্ত ধরনের কাজ তাঁরা তাঁদের ডকুমেন্ট দিয়ে করতে পেরেছেন । এই নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের অবদান রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারক । তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শান্তনু ঠাকুরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি ।
প্রসঙ্গত, মতুয়া উদ্বাস্তু সম্প্রদায়ের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি নাগরিকত্ব । মতুয়া সম্প্রদায়ের বড়মা বীণাপাণি ঠাকুর নাগরিকত্বের জন্য আন্দোলন করেছিল । বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস পেলেও নাগরিকত্ব পাননি । অবশেষে লোকসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব দেওয়ার ঘোষণা করে কেন্দ্র । সেইমতো নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করে নাগরিকত্ব পেলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের গৃহবধূ শান্তিলতা বিশ্বাস । স্বাভাবিক অর্থে এই খবরে খুশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা ।
আরও পড়ুন: